বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গে টানা চারদিন ধরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বৃহস্পতিবার ফেরার কথা রয়েছে তাঁর। তবে তার আগে বুধবার ফের দার্জিলিংয়ের রাস্তায় নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরেই প্রশাসনিক বৈঠক করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর সেখানেই সিকিম নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রবল বৃষ্টি এবং ভুটানের জলে সপ্তাহখানেক আগে কার্যত তছনছ হয়ে যায় উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি এলাকা। বর্তমানে প্রশাসনের প্রচেষ্টায় বিপর্যয় কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে পাহাড়। তবে বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় এখনও বিভিন্ন এলাকার ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন বহু মানুষ। অনেকের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। ধসের জেরে বন্ধ বেশ কয়েকটি রাস্তা। এই পরিস্থিতিতে দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করতে গত রবিবার ফের উত্তরবঙ্গ যান মমতা। বর্তমানে সেখানেই রয়েছেন তিনি। এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান উত্তরবঙ্গে বিপর্যয়ে মোট ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে, এরমধ্যে দার্জিলিঙে মৃতের সংখ্যা ২১।
এদিনের বৈঠকে ফের পড়শি রাজ্য থেকে জল ছাড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। একই সঙ্গে দুর্যোগে কেন্দ্রের সাহায্য না পাওয়া নিয়েও দ্বিচারিতার অভিযোগ এনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা এক পয়সা পাইনি, তা সত্ত্বেও আমাদের সরকার কীভাবে মানুষকে সাহায্য করেছে সেটা সবাই দেখতে পাচ্ছেন।' এরপরই জনতার উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র টাকা না দিলেও আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে যদি কেউ সাহায্য করতে চান, সেজন্য সরকারের তরফে ডিজাস্টার রিলিফ ফান্ড চালু করা হয়েছে। ওয়েস্টবেঙ্গল স্টেট ডিজাস্টার ম্যানজেমেন্ট অথরিটির নামে এই ফান্ড চালু করা হয়েছে। চাইলে সরাসরি যে কেউ এই ফান্ডে সাহায্য করতে পারেন।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সিকিমের পরিস্থিতি নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, '১৪ টা হাইডেল পাওয়ার সিকিমে তৈরি করা হয়েছে, প্রকৃতীকে নিয়ে খেলা যায় না, সিকিমকে নিয়ে ভয় হচ্ছে, কোনও ডিজাস্টার ঘটে যেতে পারে উত্তরাখণ্ডের মতো, ধস সবচেয়ে বড় সমস্যা।'
বুধবার দার্জিলিঙে প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, 'দুধিয়ার অস্থায়ী সেতু আর সাত দিনের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে। পাশাপাশি, সেখানে একটি স্থায়ী সেতুর কাজও চলছে, যা বছর দেড়েক আগেই শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই পায়ে হাঁটার একটি ছোট সেতু তৈরি করা হয়েছে।' মমতা জানান, বর্তমানে ৩৭টি ত্রাণ শিবিরে এখনো রয়েছেন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ। তাঁদের রান্না করে খাওয়ানো হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যত দিন না তারা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, তত দিন চালু থাকবে এই শিবিরগুলি।