scorecardresearch
 

লাগাতার কচ্ছপ মৃত্যু, কোচবিহারের বাণেশ্বরের হেরিটেজ 'মোহন'দের জীবন সংকটে

দূষণের কারণে বাণেশ্বরের মোহনদের জীবন সংশয় দেখা দিয়েছে। শিবদিঘিও তার ব্যতিক্রম নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে অনিয়ন্ত্রিত, যত্রতত্র ও যথেচ্ছ ভাত, রুটি ও অন্যান্য খাবার ছড়িয়ে দেওয়ার পর, কচ্ছপদের খাওয়ার পর উদ্বৃত্ত খাবারগুলি পরিষ্কার করা হয় না। নিয়মিত তা থেকেই ওই সমস্ত পুকুরগুলোর সঙ্গে বিশেষ করে শিবদিঘির অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করেছে।

Advertisement
লাগাতার কচ্ছপ মৃত্যু, কোচবিহারের বাণেশ্বরের হেরিটেজ 'মোহন'দের জীবন সংকটে লাগাতার কচ্ছপ মৃত্যু, কোচবিহারের বাণেশ্বরের হেরিটেজ 'মোহন'দের জীবন সংকটে
হাইলাইটস
  • দূষণের মাত্রা বাড়ছে, অক্সিজেন কমছে
  • খাবার পরিষ্কার না হওয়াতেই বিপত্তি
  • প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি বনদফতরের

কোনটার বয়স আশি বছর, কোনওটার একশো বা আরও বেশি। কোচবিহারের বানেশ্বরের শিবদিঘির কচ্ছপ যা মোহন নামে পরিচিত। শুধু কচ্ছপের বয়স হিসেবেই নয়, পবিত্রতার দিকেও এই সমস্ত কচ্ছপগুলি স্থানীয় মানুষদের কাছে পূজ্য। দেবতা জ্ঞানেই তাদের পুজো করা হয়। গোটা কোচবিহার জেলার বিভিন্ন দিঘিতেই এই সমস্ত মোহনেরা রয়েছে। তবে বাণেশ্বরের শিবদিঘির কচ্ছপ সবচেয়ে বেশি প্রাচীন ও বিখ্যাত।

সেই বাণেশ্বরের শিবদিঘির কচ্ছপের মৃত্যু ও অসুস্থতা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতর। চলতি সপ্তাহে দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের অধীনে থাকা কোচবিহার ২ ব্লকের বাণেশ্বর শিবমন্দির চত্বরের শিব দিঘিতে দু’টি মোহনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত বুধবার একটি মোহনের দেহ জলে ভেসে উঠতে দেখা যায়। শুক্রবার আবারও শিব দিঘির একটি মোহন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পাড়ে পড়ে রয়েছে। যা নিয়ে স্থানীয় ও পরিবেশপ্রেমীদের মধ্যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মন খারাপ ভক্তদের। যদিও শিব ঘিতে একের পর এক কচ্ছপের মৃত্যু ও অসুস্থ হয়ে পড়া নিয়ে দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ড তথা প্রশাসনের উদাসীনতা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। বন দফতরকে খবর দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ, বাণেশ্বরের শিবদিঘিতে ফের মোহনের মড়ক লেগেছে। চলতি সপ্তাহে শিবদিঘির দুটো কচ্ছপ মারা গিয়েছে। এদিন আবার একটি মোহন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বিষয়টি তাঁরা ইতিমধ্যেই বন দফতরকে জানিয়েছেন। চলতি সপ্তাহে বাণেশ্বরের শিব দিঘিতে ফের কচ্ছপের মৃত্যু ও অসুস্থ হয়ে পড়া নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ এনেছেন বাণেশ্বর মোহন রক্ষা কমিটির সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য পরিমল বর্মনও। তিনি এমনকি বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনবেন বলেও একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। বাণেশ্বর মোহনরক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন শীলও অভিযোগ জানিয়েছেন, মোহনগুলোকে নিয়ে দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের উদাসীনতা রয়েছে।সে কারণেই এই ঘটনা ঘটছে বারবার। বন দফতরের তরফে অসুস্থ কচ্ছপটির চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

Advertisement

কেন বারবার কচ্ছপের মড়ক?

পরিবেশপ্রেমীদের দাবি. সবগুলি দিঘিতে দূষণের কারণে এই সমস্ত মোহনদের জীবন সংশয় দেখা দিয়েছে। শিবদিঘিও তার ব্যতিক্রম নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে অনিয়ন্ত্রিত, যত্রতত্র ও যথেচ্ছ ভাত, রুটি ও অন্যান্য খাবার ছড়িয়ে দেওয়ার পর, কচ্ছপদের খাওয়ার পর উদ্বৃত্ত খাবারগুলি পরিষ্কার করা হয় না। নিয়মিত তা থেকেই ওই সমস্ত পুকুরগুলোর সঙ্গে বিশেষ করে শিবদিঘির অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করেছে। বনবিভাগও বিভিন্ন সময় দাবি করেছেন, বনবিভাগের বিশেষজ্ঞদের দাবি সিদ্দিকীর জলে অক্সিজেনের মাত্রা আগের চেয়ে অনেক কমে এসেছে। দ্রুত সমাধান করতে না পারলে পরে যদি শতাব্দীপ্রাচীণ কচ্ছপগুলি একে একে মৃত্যু হয় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে সক্রিয় হওয়ার দাবি জানিয়ে তাদের হস্তক্ষেপ এর আবেদন জানিয়েছে বনদপ্তর বলে জানা গিয়েছে।

 

Advertisement