Ganga Erosion 2025: পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। একে একে শহর থেকে গ্রামে পৌঁছে গিয়েছেন মা দুর্গা। চারপাশে আনন্দ আর উৎসবের রং। কিন্তু তারই মধ্যে ভয়াবহ গঙ্গাভাঙনের থাবায় কেঁপে উঠছে মালদা ও মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকা।
সবচেয়ে চিন্তার বিষয়, ভূতনির হিরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় দেড় কিলোমিটার অঞ্চল ইতিমধ্যেই নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, মানিকচকের গোপালপুরেও শুরু হয়েছে নতুন করে ভাঙন। এক মাস আগে যে ক্ষয় শুরু হয়েছিল ছোট এলাকায়, তা গত দু’দিনে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। শুধু বৃহস্পতিবারই মাত্র কয়েক ঘণ্টায় গোপালপুরের প্রায় ২০০ মিটার এলাকা গঙ্গায় তলিয়ে যায়।
আরও উদ্বেগের বিষয়, কয়েক কোটি টাকা খরচ করে সেচ দফতর যে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করেছিল, তা ভেসে গিয়ে মিশে গিয়েছে গঙ্গার গর্ভে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ, “এত টাকা খরচ করে কি শুধুই লোকদেখানো কাজ হয়েছে?” ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী বোল্ডার পাইলিং-এর দাবি তুলেছেন তাঁরা।
গোপালপুর পঞ্চায়েতের শান্তি মোড় এখন গঙ্গা থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে। ভাঙন যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে এলাকাটি আর কতদিন থাকবে, তা নিয়ে গভীর শঙ্কায় স্থানীয় বাসিন্দারা। চোখের সামনে বিঘার পর বিঘা জমি নদীতে গড়িয়ে যেতে দেখে অনেকে ফসল আর গাছপালা কেটে ফেলছেন। নিরাপদ জায়গায় চলে যাওয়ার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কামালতিপুর জামে মসজিদ এলাকায়। ভাঙনের জেরে মাটির একটা অংশ ধসে গিয়েছে, আর মসজিদটি এখন ঝুলন্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে গঙ্গার কিনারায়।
এমন অবস্থায় পুজোর আনন্দ নয়, গঙ্গার প্রতিদিন বদলে যাওয়া খামখেয়ালিপনায় ভয়ই এখন একমাত্র সঙ্গী নদীপাড়ের মানুষজনের। তাঁরা জানেন না, আগামী প্রহরে তাঁদের ঘর, মন্দির বা মসজিদ আদৌ থাকবে কি না। এবার প্রশ্ন একটাই, প্রতি বছর পুজোর মুখেই কেন ত্রাস হয়ে ওঠে গঙ্গা? আর ক’টা পরিবার, ক’টা বিঘে জমি, ক’টা জীবন গেলে স্থায়ী সমাধান খুঁজবে প্রশাসন?