Kalo Nunia GI Tag: বড় স্বীকৃতি কালো নুনিয়ার, এবার GI ট্যাগ পেল উত্তরবঙ্গের 'ধানের রাজা'
Kalo Nunia GI Tag: গোবিন্দভোগ, তুলাইপাঞ্জি চাল ‘জিআই’ স্বীকৃতি পেয়েছিল আগেই। এ বার সে তালিকায় যুক্ত হল উত্তরবঙ্গের ‘ধানের রাজা’ কালো নুনিয়াও। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্টেট এগ্রিকালচারাল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের তরফে ‘জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন’ বা ‘জিআই’ স্বীকৃতির জন্য আবেদন জানান হয়েছিল। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে, সে স্বীকৃতি মিলেছে। নতুন বছরের শুরুতে ওই স্বীকৃতিতে আশার আলো দেখছেন উত্তরের কৃষি মহলের অনেকেই।
বড় স্বীকৃতি কালো নুনিয়ার, এবার GI ট্যাগ পেল উত্তরবঙ্গের 'ধানের রাজা' - কোচবিহার,
- 06 Jan 2024,
- (Updated 06 Jan 2024, 5:08 PM IST)
হাইলাইটস
- বড় স্বীকৃতি কালো নুনিয়ার
- এবার GI ট্যাগ পেল এই চাল
- উত্তরবঙ্গের চালের রাজা নামে বিখ্যাত
Kalo Nunia GI Tag: উত্তরবঙ্গের ধানের রাজা বলে পরিচিত কালো নুনিয়ার কদর বিশ্বজুড়ে। প্রচুর পরিমাণে চাষ হয় না। তাই চাহিদা আরও বেশি। কালো নুনিয়া স্বাদে-গন্ধে ইতিমধ্যেই মাত করেছে রসনাপ্রেমীদের। এই চাল উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকা ছাড়া তেমন চাষ হয় না। এখানকার কালো নুনিয়াই পরীক্ষাগতভাবে সেরা বলে প্রমাণিত বিভিন্ন গবেষণায়। দীর্ঘ বছর ধরে উৎপাদন হয়ে আসলেও এই ধানের স্বীকৃতি ছিল না। তাই আরও কয়েকটি চালের সঙ্গে প্রায় ২ বছর আগে জিআই ট্যাগের জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল কালো নুনিয়ারও। অবশেষে সেই স্বীকৃতি এল। তাতে খুশি উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে কোচবিহার জেলার মানুষ। কারণ সবচেয়ে বেশি কালো নুনিয়া হয় কোচবিহারেই। এরপরেই জলপাইগুড়িতেও এই চাল হয় প্রচুর পরিমাণে।
গোবিন্দভোগ, তুলাইপাঞ্জি চাল ‘জিআই’ স্বীকৃতি পেয়েছিল আগেই। এ বার সে তালিকায় যুক্ত হল উত্তরবঙ্গের ‘ধানের রাজা’ কালো নুনিয়াও। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্টেট এগ্রিকালচারাল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের তরফে ‘জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন’ বা ‘জিআই’ স্বীকৃতির জন্য আবেদন জানান হয়েছিল। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে, সে স্বীকৃতি মিলেছে। নতুন বছরের শুরুতে ওই স্বীকৃতিতে আশার আলো দেখছেন উত্তরের কৃষি মহলের অনেকেই।
উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বীজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক বিধান রায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন “পাঁচ বছর আগে থেকেই কালো নুনিয়ার জিআই স্বীকৃতির চেষ্টা হচ্ছিল। গোবিন্দভোগ, তুলাইপাঞ্জির মতো কালো নুনিয়া চাল এক গুরুত্বপূর্ণ তালিকায় যুক্ত হল।
কেমন এই কালো নুুনিয়া?
মূলত আমন মরশুমে কালোনুনিয়া ধানের চাষ করা হয়। উত্তর দিনাজপুরে তুলাইপাঞ্জির যেমন চাহিদা তেমনি উত্তরবঙ্গের মূলত কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে সুগন্ধী ধান কালোনুনিয়ার বিশেষ চাহিদা রয়েছে। কালোনুনিয়া হল ১৪০ দিনের ধান। বিঘা প্রতি এর উৎপাদন ১২ থেকে ১৪ মণ। ছোট দানার চাল। সুগন্ধী ও সুস্বাদু বলে পায়েসের জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কালীপ্রসন্ন সিংহের মহাভারতে উল্লেখ আছে, পাণ্ডবরা বনবাসে থাকার সময় উত্তরবঙ্গে এসে এই চালের চাষ শুরু করে। কালো রঙের এই চালের জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে নানা লোককথা ছড়িয়ে আছে কোচবিহার এবং জলপাইগুড়িতে। লোকমুখে প্রচলিত, কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের সময় এই ধানের চাষ হতো। এবং এই চালের তৈরি পায়েস মদনমোহন মন্দিরে ঠাকুর মদনমোহনকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হতো। আজও মদনমোহনকে কালো নুনিয়া চালের পায়েস দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে।
কালো নুনিয়া ধান কালো রঙের। সুগন্ধি ওই ধানের চাল ফোটালে, ঝরঝরে সুস্বাদু ভাত হয়। এ ছাড়া, পায়েস তৈরিতেও কদর রয়েছে ওই চালের। এক সময় কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের বিস্তীর্ণ এলাকায় তো বটেই, উত্তর দিনাজপুরের কিছু জায়গায় কালো নুনিয়া ধানের ভাল রকম চাষ হত।তবে বর্তমানে কোচবিহার-জলপাইগুড়িতেই এই ধান চাষ হয়।
জিআই তকমা পেতে কী শর্ত?
“জিআই পেতে তকমা পেতে গেলে প্রথমেই প্রমাণ করতে হয় যে এই প্রোডাক্টটি নির্দিষ্ট অঞ্চলেই তৈরি হয়। বা সেই নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনজীবনের সঙ্গে তার গভীর যোগাযোগ আছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন গবেষণাপত্র থেকে প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহ করা হয়েছে। তাছাড়া, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারের লোকজীবনের সঙ্গে এই চালের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবির। এমন সুগন্ধী চাল খুব কমই পাওয়া যায়।” বলছিলেন চুঁচুড়া ধান্য গবেষণাকেন্দ্রের প্রবীণ গবেষক ডঃ বিজন অধিকারী। জিআই তকমা পেলে বাংলার এই ঐতিহ্যশালী ধানের ব্যবসা আরও মজবুত হবে বলেই মনে করেন তিনি। “এর ফলে নির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চলের বাইরে আর কোথাও এই প্রজাতির ধান চাষ করা যাবে না। ফলে কৃষকদের অর্থনৈতিক সুবিধা আসবেই।” বলছিলেন তিনি।