Lokesabha Election 2024 Darjeeling: হুমকি দিয়েছিলেন, বিজেপি যদি ভূমিপুত্রকে প্রার্থী না করে তাহলে নির্দল থেকে থেকে দাঁড়াবেন। বিজেপি ভূমিপুত্রকে বাদ দিয়ে ফের বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্তাকেই টিকিট দিয়েছে। ফলে তাঁর পূর্বঘোষণা মতো নির্দল থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। যার পরই বিজেপি ঘোষণা করেছিল বিষ্ণুপ্রসাদ মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল। কিন্তু ঘটনার পর প্রায় ১৫ দিন কেটে গেলেও রা কাড়ছেন বিজেপি নেতারা। বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে কোনও কথাও বলছেন না, আবার ব্যবস্থাও নিচ্ছেন না। কিন্তু কেন?
কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিজেপি করলেও ভূমিপুত্রের বিরুদ্ধে সওয়াল করছেন দীর্ঘদিন ধরেই। পাহাড়ে কোনও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি বিজেপি। ফলে বেগতিক বুঝে ও নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু অক্ষুণ্ণ রাখতে দলের বহিরাগত প্রার্থী হিসেবে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ রাজু বিস্তকে লক্ষ্য করে তোপ দেগেছেন। বিজেপির দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করার আগেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, দার্জিলিংয়ের ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করতে হবে। যিনি সমস্যা তুলে ধরবেন সংসদে। হর্ষবর্ধন শ্রিংলার নাম না করলেও তাঁকে প্রার্থী করলে তাঁর আপত্তি নেই বলে দলীয় অভ্যন্তরে জানিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। শেষমেষ রাজুকেই প্রার্থী করে দল। আর প্রতিশ্রুতিমতো নির্দল থেকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা করেন তিনি।
বিষ্ণুর এই পদক্ষেপ যে ভালো চোখে দেখছেন না, তা জানিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারষ জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু কবে নেবে? তা তিনি বা কেউ জানাননি। জানা যাচ্ছে ভোটের আগে বিষ্ণুর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে সাহস পাচ্ছে না তাঁরা। তার কারণ এমনিতেই পাহাড়ের মানুষের আনুগত্য এবার ভাগ হয়ে গিয়েছে। তার উপরে বিষ্ণুর দাবির সবগুলি ন্যায্য। ফলে বিষ্ণুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। মানুষের কাছে জনবিরোধী বার্তা যেতে পারে। তাই ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন তাঁরা।
পাহাড়ের বিক্ষুব্ধ বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদের বক্তব্য, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের আশ্বাস দিয়ে ২০০৯ সাল থেকে পরপর তিনবার দার্জিলিং আসনে গোর্খাদের সমর্থন নিয়ে জিতে এসেছে বিজেপি। প্রতিবারই ‘বহিরাগত’ প্রার্থীদের সাংসদ হিসাবে পাচ্ছেন পাহাড়বাসী। কখনও যশবন্ত সিংহ, কখনও সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া, কখনও রাজু বিস্টকে টিকিট দিয়ে দার্জিলিং থেকে সংসদের সদস্য করেছে বিজেপি। প্রাধান্য দেওয়া হয়নি পাহাড়ের ভূমিপুত্রকে। এটাই তাঁর দাবি। তাঁর লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু ভূমিপুত্র হলে পাহাড়ের উন্নতি হবে। ১৫ বছরে বহিরাগত প্রার্থীরা কোনও উন্নয়ন করেনি।
কী বলছেন বিজেপি বিধায়ক?
মনোনয়ন জমা দিয়ে বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা জানিয়েছেন, "আমি আগেই জানিয়েছিলাম, আমরা বিজেপির সহযোগী হলেও মানুষ ভূমিপুত্র চাইছে। তাই বিজেপি যদি ভূমিপুত্র না দেয়,আমি নিজে প্রার্থী হব। বিজেপি ভূমিপুত্র দেয়নি। তাই আমি মনোনয়ন জমা দিলাম।" তিনি জানান, তাঁর এই পদক্ষেপের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি যে পদক্ষেপ করবে তিনি মেনে নেবেন। তিনি বলেন, "এই লোকসভা নির্বাচনে আমার মূল এজেন্ডা হবে গোর্খাল্যান্ড। অন্যান্য দল এখন ঠিক করুক, তাঁরা আমাকে সমর্থন দেবে কি না।" বিষ্ণুবাবু মুখ খুললেও বিজেপি নেতৃত্বে এ নিয়ে এখনও মুখ খুলছেন না।
শেষবার ২০০৪ সালে দার্জিলিঙের ভূমিপুত্র হিসেবে লোকসভায় যান কংগ্রেসের দাওয়া নারবুলা। ২০০৯ সাল থেকে দার্জিলিং লোকসভা আসনটি বিজেপির দখলে। ২০০৯ সালে সাংসদ হন যশবন্ত সিং। ২০১৪ সালে সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়া, ২০১৯ -এ রাজু বিস্তা। তিনজনের কেউই পাহাড়ের ভূমিপুত্র নন। এবারও বিজেপি রাজুবাবুতেই আস্থা রেখেছে।