টি-ট্যুরিজমে আপত্তি পাহাড়ের! চা উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটাবে এই প্রকল্প এমন ভাবনা থেকেই পাহাড়ে চা বাগানে কোনও রকম হোমস্টে বা রিসর্ট নির্মাণে তীব্র আপত্তি জানাল গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন () চিফ অনিত থাপা। শুধু আপত্তি জানানোই নয়, তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এমন উদ্যোগ পাহাড়ে নিতে দেওয়া হবে না। এদিকে মুখ্য়মন্ত্রী গতকালই ঘোষণা করেছিলেন চা বাগানের ৩০ শতাংশ জমি পর্যটনের জন্য ব্যবহার করা হবে। ফলে অনিতের হুঁশিয়ারিতে পাহাড়ে রাজনৈতিক সমস্যা তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে। পাশাপাশি এই ইস্যুতে পাহাড়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে পাহাড়ের প্রধান দলের সংঘাত তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
চা বাগানের ৩০ শতাংশ জমি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই অনিত থাপা জানিয়ে দিয়েছেন, "পাহাড়ের সৌন্দর্য, পাহাড়ের সবুজকে ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না। কিছু লোক এসে চা বাগানের নতুন নির্মাণ করবে, বহুতল তৈরি করবে এটা আমরা হতে দেব না। যে কোনও প্রকারে পাহাড়ে এটা আটকানো হবে।" বরং পাহাড়ে চা বাগান শ্রমিকদের দখলে থাকা জমির পুরোটারই পাট্টার দাবি তুলেছেন অনিত। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনীত এমন অবস্থান নেওয়ায়, তাঁর মন্তব্যে পাহাড়ে হইচই পড়েছে।
জিটিএ চিফের পাশাপাশি চা বাগানে পর্যটনের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চা শিল্পকে ধ্বংসের অভিযোগ তুলেছেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ বিজেপির রাজু বিস্তা। তাঁর অভিযোগ, এই প্রচেষ্টার মধ্যে দিয়ে চা শ্রমিকদের জমির অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে রাজ্য সরকার। শ্রমিকদের বঞ্চিত করে রিয়েল এস্টেট ব্যবসাকে ইন্ধন জোগানো হচ্ছে। যা নতুন অশান্তির জন্ম দেবে উত্তরবঙ্গের চা বাগিচা অঞ্চলে।
মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তরাই সংগ্রামী চা শ্রমিক ইউনিয়ন। সংগঠনের কার্যনিবাহী সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার জানিয়েছেন, ১৫ শতাংশ জমি ব্যবহারের যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তাতেই একের পর এক চা বাগানে রিসর্ট, আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে। এটা দ্বিগুণ হয়ে গেলে চা বাগানের চরিত্রই ধ্বংস হবে। এতে চা শিল্প বিপদে পড়বে। তাঁরাও এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
বুধবারই কলকাতায় বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের জমিতে নও পর্যটন অর্থাৎ টি ট্যুরিজম প্রকল্পের জন্য ৩০ শতাংশ জমি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। যা নিয়ে জশন পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন পড়েছে।