Siliguri Town Station: পুরনো শিলিগুড়ির ইতিহাস খুঁজতে বসলে সর্বাগ্রে যেই নাম বা জায়গার কথা উঠে আসে, সেটি হল শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন।সবচেয়ে উজ্জ্বল ধ্রুবতারার মতো এখনও জ্বলজ্বল করে প্রবীণ বাসিন্দাদের মনে। এই স্টেশনে পদার্পণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী, বাঘাযতীনের মতো মনীষীরা।
তখন কলকাতা বা দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ কিংবা দার্জিলিং যেতে যোগাযোগের প্রান্তিক ল্যান্ডমার্ক ছিল এই স্টেশনটিই। আগে দার্জিলিং মেল চলত পদ্মা নদীর উপর দিয়ে। রুট ছিল অধুনা বাংলাদেশ হয়ে হলদিবাড়ি হয়ে শিলিগুড়ি টাউন। স্বাধীনতার পর দার্জিলিং মেলের রুট বদলাল। ফরাক্কা হয়ে বিহারের মধ্যে দিয়ে ট্রেন এল। শিলিগুড়ির লোকসংখ্যা বাড়ল।শিলিগুড়ি জংশন ও এনজেপি দুটি বড় জংশন স্টেশন তৈরি হল। এরপর ধীরে ধীরে ট্রেন কমতে শুরু করল এই স্টেশনে।
শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনের পথচলা শুরু ১৮৮০ সালে। স্টেশনের ইতিউতি এখনও ছড়িয়ে ব্রিটিশ স্থাপত্যের নিদর্শন। কিন্তু অবহেলায় সেসবের এখন ভগ্নদশা। চুরি গিয়েছে একাধিক সামগ্রীও। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত ডুয়ার্স ও বিহারগামী কয়েকটি স্বল্প দূরত্বের একাধিক ট্রেন থামলেও বর্তমানে টিঁকে রয়েছে টিমটিম করে মাত্রই কয়েকটি ট্রেন। অভিযোগ, একের পর এক ট্রেন বন্ধ করে স্টেশনটিকে কার্যত বাতিলের খাতায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এই মুহূর্তে স্টেশনটির বেহাল অবস্থা। আবর্জনায় ভরে রয়েছে চারিদিক। আগে কলকাতাগামী ট্রেন সব এই টাউন স্টেশন থেকেই যাতায়াত করত। এমনকী দার্জিলিংয়ে যাওয়ার টয়ট্রেনও এই টাউন স্টেশন থেকেই ছাড়ত। তবে এখন আর সেরকম গুরুত্বপূর্ণ কোনও ট্রেন স্টেশনে দাঁড়ায় না।
শঙ্কর ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে জানান, রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে দীর্ঘদিনের দাবি জানিয়েছিলাম। তিনি চিঠি দিয়ে বিষয়গুলি নিয়ে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন। খুব শীঘ্রই শহরের মানুষের দীর্ঘদিনের আশা পূরণ হবে বলে আশা করছেন তিনি। দীর্ঘ প্রায় কয়েক দশক পরে ফের আশার আলো দেখছে শিলিগুড়ি। সৌজন্যে শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এবং কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রক।
গত ১৪ জানুয়ারি রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনকে হেরিটেজ তকমা দেওয়ার আবেদন করেছিলেন শঙ্কর। তারই উত্তরে রেলমন্ত্রী চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট ডিরেক্টরেটকে বিষয়টি দেখে রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বেশি রাতে শিলিগুড়ি থেকে কলকাতাগামী ট্রেন চেয়েও রেলমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছিলেন বিধায়ক। সেই ট্রেন চালুর ব্যাপারেও নাকি ইঙ্গিত দিয়েছেন মন্ত্রী, এমনটাই দাবি শংকরের।