Teesta River Sand Dredging Started By West Bengal Irrigation Department: এমনিতেই দীর্ঘ বছর ধরে পলি জমে নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছিল তিস্তা। যার সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী জলপাইগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকা। তার উপর ২ বছর আগে তিস্তায় হ্রদ ভাঙা জলে পাহাড়ের একটা বিস্তীর্ণ এলাকা ভেঙে পলি হয়ে সমতলে নেমে এসেছিল। সব মিলিয়ে নাব্যতা হারিয়ে থমকে পড়েছিল তিস্তা। তিস্তার উপর থেকে দেখলে মনে হত জলে টইটুম্বুর। কিন্তু জলে নামলে বোঝা যেত নামে তাল পুকুর, বেশিরভাগ অংশে ঘটি ডোবে না। অবশেষে নদীর নাব্যতা ফেরাতে নামল রাজ্য সরকার।
গজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজের তিস্তা-মহানন্দা লিংক ক্যানালে ড্রেজিংয়ের (Dredging) কাজ শুরু করল সেচ দফতর। ব্যারেজের নাব্যতা বাড়ানো, শিলিগুড়ি পুরনিগমের পানীয় জলপ্রকল্পে জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি ফাঁসিদেওয়ার জলবিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্টে জল সরবরাহ ঠিক রাখতেই এই ড্রেজিং বলে সেচ দফতরের তিস্তা লেফট ব্যাংক ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
তিস্তা ব্যারেজের দু’দিকেই জল ছাড়া হয়। একদিকে মিলনপল্লি দিয়ে তিস্তা নদী হয়ে জলপাইগুড়ির দিকে জল যায়। পাশাপাশি, ফাঁসিদেওয়ার হাপতিয়াগছ, লিউসিপাকরি ও ভোলাগছের ৩টি জলবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পেও এই লিংক ক্যানালের জল গিয়ে থাকে। অন্যদিকে, ব্যারেজের বাম দিকে গেটবাজার হয়ে ফুলবাড়ির তিস্তা-মহানন্দা লিংক ক্যানাল দিয়ে জল বিভিন্ন খাতে প্রবাহিত হয়। যা সেচের পাশাপাশি শিলিগুড়ি পুর এলাকায় পানীয় জল সরবরাহে অপরিহার্য। একাধিক অ্যাকোয়াডাক্টে জলপ্রবাহ বাড়ানোর কাজ চলে বাম দিকের ক্যানালের জলে।
বর্তমানে ব্যারেজের মধ্যে অল্প জল থাকায় তা একপ্রান্তে আটকে রাখার জন্য ব্যারেজের বালি দিয়েই অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। এরপর প্রায় চার থেকে পাঁচ ফুট গভীরতায় ড্রেজিং করে ব্যারেজ থেকে বালি তোলা হচ্ছে। ড্রেজিংয়ে কাজে লাগানো হয়েছে বেশ কয়েকটি আর্থমুভার। ব্যারেজের ক্যানালে আর্থমুভার নামিয়ে টন টন বালি তুলে ডাম্পারে লোড করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয়েছে ৩০টির বেশি ডাম্পার। ব্যারেজের কাছে তিস্তা-মহানন্দা লিংক ক্যানালের বিস্তীর্ণ এলাকায় ড্রেজিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কাজের দায়িত্ব একটি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাজ্যের খনিজ উন্নয়ন ট্রেডিং নিগমের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার একে সিং।
এ ব্যাপারে শিলিগুড়ি পুরনিগমের পানীয় জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত বলছেন, ‘সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছিলেন মেয়র। তাঁর উদ্যোগ এবং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। পাহাড়ে যদি প্রাকৃতিক বড় বিপর্যয় না ঘটে, তবে আশা করছি পানীয় জল সরবরাহে তেমন সমস্যা হবে না।’