Bagdogra Airport: ‘পয়েন্ট অফ কল’-এ জায়গা করে নিয়েছে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দর। এর অর্থ হল কলকাতার দমদম বিমানবন্দরের পর রাজ্যের দ্বিতীয় বিমানবন্দর হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলার অপেক্ষায় রয়েছে এই এয়ারপোর্ট। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বীকৃতি পাওয়ার আগে প্রয়োজন ছিল দীর্ঘদিনের দাবিমতো নতুন টার্মিনালের পাশাপাশি বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণের কাজ চালু করা। কিন্তু নানা জটিলতায় তা শুরু না হওয়ায় মাথায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের। অবশেষে এল সুখবর।
আগামী ২০ অক্টোবর শিলিগুড়িতে বাগডোগরা বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরির কাজের সূচনা হতে চলেছে। এই কাজের সূচনার শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে শিলিগুড়িতে তিনি আসছেন না। বারাণসী থেকে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভার্চুয়ালি এই কাজের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে। বাগডোগরাকে আন্তর্জাতিক করে গড়ে তুলতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ শুরু হলেই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পাবে রাজ্য।
শিলান্যাস উপলক্ষে শিলিগুড়ির কাওয়াখালি ময়দানে একটি বিশাল মঞ্চের তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে উপস্থিত থাকবেন বিজেপির বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ এবং বিধায়কেরা। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবেরও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। তাঁরা আসবেন কি না, তা অবশ্য় এখনও সুনিশ্চিত নয়।
উল্লেখ্য দীর্ঘদিন ধরে এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক করে গড়ে তোলার জন্য প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু বর্তমান টার্মিনাল ছোট হওয়ায় এটিকে সম্প্রসারণের প্রয়োজন ছিল। সেই সঙ্গে আরও কিছু সুযোগ সুবিধা তৈরি করা প্রয়োজন ছিল। তবে তার জন্য বাড়তি জমি প্রয়োজন ছিল। যা অধিগ্রহণে দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হয়। অবশেষে রাজ্য সরকার ১০৮ একর জমি দেয় এবং কেন্দ্র সরকার অর্থ বরাদ্দ করে। অবশেষে এই কাজ শুরু হচ্ছে।
কত টাকা বরাদ্দ?
বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকরণের জন্য ১,৫৪৯ কোটি টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিংয়ের সাংসদ ও বাগডোগরা বিমানবন্দরের উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান রাজু বিস্তা জানিয়েছেন, ‘উত্তরবঙ্গের জন্য এটা অত্য়ন্ত বড় খবর। দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষ। কাজ শুরু হতে চলেছে বাগডোগরা বিমানবন্দরের সিভিল এনক্লেভের। আশা করছি নতুন টার্মিনাল তৈরি হলে যাত্রীদের ওঠা-নামার সঙ্গে লাউঞ্জ ও টার্মিনালের সমস্য় আর থাকবে না।
কী কী আধুনিকীকরণ করা হবে?
১. নতুন টার্মিনাল হবে ৭০,৩৯০ বর্গ মিটার। ফলে ঘণ্টায় প্রায় তিন হাজার যাত্রী থাকতে পারবেন টার্মিনালে। বছরে ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি যাত্রী বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে যাতায়াত করতে পারবেন।
২. যাত্রীদের সুবিধার্থে মাল্টি লেভেল কার পার্কিং গড়ে তোলা হবে।
৩. ভিআইপি লাউঞ্জের পরিসর বাড়ানো হবে।
৪. লবি প্রশস্ত করা হবে।
বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকরণের পর এ-৩২১ এর মতো এয়ারক্রাফট ওঠানামা করতে পারবে বলে আশাবাদী সাংসদ বিস্ট। তিনি বলছেন, ‘সাংসদ হিসেবে একটা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছি বলতে পারি। বাকি প্রতিশ্রুতিও পূরণ করার ব্যাপারে দায়বদ্ধ। আশা করছে পর্যটন সহ নানান ক্ষেত্রে উপকৃত হবে উত্তরবঙ্গ।’
বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৮ হাজার যাত্রী বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে আকাশে ওঠানামা করেন। বিমানবন্দরে থেকে এখন প্রতিদিন গড়ে ৩২ জোড়া বিমান চলাচল করে। গত বছর ১০ লক্ষ যাত্রীতে পৌছে রেকর্ড তৈরি করে বাগডোগরা বিমানবন্দর। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় লাউঞ্জ ও লবি ছোট হওয়ায়। এবার সমস্য়া মিটলে আন্তর্জাতিক উড়ানে সমস্য়া হবে না।