Fox Fear At Malda Harishcandrapur: শিয়াল আতঙ্কে কাঁপছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রত্যন্ত গ্রামগুলি। সন্ধ্যা নামলেই গ্রামের পথে শোনা যায় শিয়ালের হুঙ্কার, আতঙ্কে ঘরবন্দি হন গ্রামবাসী। সূর্য ডোবার পরই ফাঁকা হয়ে যায় রাস্তা, রাত বাড়তেই নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা গ্রামাঞ্চল।
বছর তিনেক আগে হরদমনগর গ্রামে এক রাতে সোনালি শিয়ালের হামলায় প্রায় ৪০ জন গ্রামবাসী জখম হয়েছিলেন। তারপর থেকেই শীত মানেই এখানকার মানুষের মনে ফিরে আসে শিয়ালের ভয়। গত মাসেই ভালুকা এলাকায় দুটি শিশুর গাল থেকে মাংস ছিঁড়ে নিয়ে যায় শিয়াল। মানিকচক ও বৈষ্ণবনগর এলাকাতেও বাড়ছে একই আতঙ্ক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুরের দুটি ব্লকের বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলে ধীরে ধীরে কমে আসছে বনাঞ্চল। ফলে খাদ্যের অভাব ও বাসস্থানের সংকটে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে সোনালি শিয়ালের দল। বন দফতরের টহলদারিও কার্যত নেই বললেই চলে, কারণ পর্যাপ্ত কর্মী নেই করিয়ালি ও চাচল ফরেস্ট রেঞ্জে।
করিয়ালি ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার দিলীপ দাস সংবাদমাধ্যমতকে জানান, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের বহু গ্রামের ঝোপঝাড়, বাঁশবন, এমনকী মানুষের বাড়ির ধানের কুঠির নিচেও আমরা শিয়ালের গর্ত দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। বন কমে যাওয়ায় তারা লোকালয়ে ঢুকছে। পাশাপাশি, হাট-বাজারে বা উৎসবের পর খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলে দেওয়ায় সেই গন্ধে আরও শিয়াল ভিড়ছে গ্রামে। গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দদাদের দাবি, শিয়াল, সাপ, বন্যপ্রাণীর আক্রমণ এখন নিত্যদিনের ঘটনা। অথচ অ্যান্টি র্যাবিজ কিংবা অ্যান্টি ভেনম ইনজেকশনের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে গ্রামীণ হাসপাতালের ওপর। সেখানেও অনেক সময় ইমিউনোগ্লোবিউলিন ইনজেকশন মেলে না। এই বিষয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ তাপস মুখোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে জানান, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মজুত আছে বলে জানান।
শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ফের সেই পুরনো আতঙ্ক ফিরে এসেছে হরিশ্চন্দ্রপুরে। একদিকে বন উজাড়, অন্যদিকে প্রশাসনিক গাফিলতি, এরই সুযোগ নিচ্ছে সোনালি শিয়ালের দল। আর তারই ফল ভোগ করছেন নিরীহ গ্রামবাসীরা।


