বছর ঘুরতেই আরও একটি ঘূর্ণিঝড়ের দুঃশ্চিন্তা দানা বাঁধছে বাংলার আকাশে। এবার যশ। ভারতীয় হাওয়া অফিস সূত্রে এখনও পর্যন্ত খবর, যশ নামক ঘূর্ণিঝড়টির অভিমুখ হতে চলেছে সেই পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলই।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগামী ২২ মে নাগাদ উত্তর আন্দামান সাগর ও পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হবে। যা পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
ঠিক এক বছর। ২০২০ সালের ২০ মে পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়েছিল ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আমফান। আমফানের তাণ্ডবলীলার ক্ষত এখনও দগদগে পশ্চিমবঙ্গে। আমফানের ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে, রাষ্ট্রসঙ্ঘ আমফানকে আয়লার থেকেও বিধ্বংসী বলে ব্যাখ্যা করেছিল।
আমফান ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার আর কলকাতায় ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩৩ কিমি। ২০০৯ সালে আয়লার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১২ কিলোমিটার। সে বারের সুপার সাইক্লোনের ধাক্কায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সুন্দরবন এলাকা।
২০২০ সালের ২০মে বকখালিতে আমফানের ল্যান্ডফল হয়। ল্যান্ডফল থেকেই ধ্বংসলীলা শুরু হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গে কম করে ৮৬ জনের মৃত্যু হয় আমফানে।
হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। বেশির ভাগ মৃত্যুই হয় বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে, না হলে বাড়ি চাপা পড়ে। রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এই ঝড়ে।
উপকূলীয় অঞ্চলগুলিতে ঝড়ের বেগ ১৫০–১৬০ কিমি ঘণ্টায় হয়েছিল।কলকাতায় ১৩৩ কিমি প্রতি ঘণ্টায় একাধিক গাছ পড়ে ভেঙে যায়। হুগলি জেলায় হাজার হাজার মাটির ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে কমপক্ষে ৭২ জন মারা গিয়েছিল, কলকাতাতে ১৫ জন।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ১০০ র বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয় এবং বাঁধগুলি ভাঙার ফলে গ্রাম ও চাষের জমিতে বন্যার সৃষ্টি হয়। পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ৮৮,০০০ হেক্টর জমির ধান এবং ২,০০,০০০ হেক্টর জমির শাকসবজি এবং তিলের ফসল নষ্ট হয়েছে।
কেবলমাত্র কলকাতায় ঘূর্ণিঝড়ে ৫০০০ গাছ পড়েছিল। শিবপুরে বটানিক্যাল গার্ডেনে বহু দেশি বিদেশি দুস্প্রাপ্য গাছ,ফুল, পাখির বাসা সমেত ২৭০ বছরের পুরানো গিনেস বুক খ্যাত দ্য গ্রেট ব্যানিয়ন ট্রি বা বিশাল বটবৃক্ষ এই ঝড়ে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।