মমতারূপী দুর্গাপুজোকে ঘিরে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়তে চাইছে না মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুরে। দুর্গা প্রতিমা প্যান্ডেলের এক কোণে রেখে দশভূজারূপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুজো করায় ইতিমধ্য়েই বিতর্কের ঝড় উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার পিপলা রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবের এই বছরের দুর্গাপুজোর থিমে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দশভূজা মূর্তি।
সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) আরও নানা মূর্তিকে তুলে ধরা হয় পুজো মণ্ডপে। তৈরি করা হয় বিশ্ব বাংলা লোগো। ফুটবল আকৃতির মণ্ডপে মমতা বন্দ্যোপাাধ্যায়কে দেখা যা দশভূজারূপে ও হুইলচেয়ারে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণ মূলক প্রকল্পের নাম দশোভূজা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে দেওয়া হয়।
শুধু তাই নয় মূল মণ্ডপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধান স্থানে বসিয়ে কোণে ছোট্ট সিংহবাহিনী দুর্গা প্রতিমার পুজো করা হয়। ছিল না লক্ষ্মী গণেশ কার্তিক সরস্বতীর মূর্তিও। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে এলাকাজুড়ে বিতর্কের ঝড়। ঘটনায় ইতিমধ্যেই নিন্দায় সরব হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরের পুরোহিত সমাজ। পাশাপাশি আগামী কয়েক বছরের জন্য ওই পুজোকে বেআইনি ঘোষণা করে বন্ধ করার দাবি তুলেছেন এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।
যদিও সপ্তমী থেকে দশমী (Durga Puja 2021) পর্যন্ত ওই পুজোমণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এই পুজো নিয়ে এলাকার তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের উন্মাদনাও ছিল চরমে। তৃণমূল (TMC) কর্মী সমর্থক পরিচালিত রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবের সম্পাদক বুলবুল খান নিজেই তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক। পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। কিন্তু সেই পুজা ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক।
তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি এলাকায় বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য এই ধরনের উস্কানিমূলক প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। এই পুজা কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে করা হয়নি। দুর্গাপ্রতিমার সঙ্গে সঙ্গে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীরও পুজো হয়েছে। রাজ্যের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলো তুলে ধরতেই এই থিমের আয়োজন বলে দাবি তাঁদের।
রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবের সম্পাদক তথা তৃণমূল নেতা বুলবুল খান বলেন, "বিজেপি এই পুজোর ভাল দিক দেখছে না। আমরা যে সকলে মিলে পুজো করে সম্প্রীতির বার্তা দিচ্ছি সেটা ওদের চোখে পড়ছে না। কারণ ওরা বিভাজনের রাজনীতি করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক প্রকল্প, যা দিয়ে মানুষের উপকার হয় তা থিমের মাধ্যমে তুলে ধরেছি। পুজো বন্ধ করে দেওয়া, সাম্প্রদায়িকতা এটাই বিজেপির রাজনীতি।"
অন্য়দিকে রাষ্ট্রীয় ব্রাহ্মণ মহা সংস্থার পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি গৌতম চক্রবর্তী বলেন, "এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। মা দুর্গার মূর্তিকে এক কোণে রেখে পুজো করছে, আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা দুর্গা রূপে দেখানো হচ্ছে, যা একদম ঠিক নয়। এটা ধর্ম এবং সংস্কৃতির অপমান।"