Di Hala Bhauju Hat of Gorubathan: বউদি কিছু দাও। অর্থাৎ নেপালি ভাষায় 'দি হালা ভাউজু' (Di Hala Bhauju) নামের সাপ্তাহিক হাটে সাংস্কৃতিক উৎসব। কালিম্পং জেলার গরুবাথান পাহাড় এক সময় ভুটানের অন্তর্ভুক্ত ছিল। আর্থিক ভাবে নিজের পরিবারকে সচ্ছল রাখতে পুরুষ থেকেও মহিলারাই এগিয়ে আসত। এবং পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে মহিলারাই হাটে-হাটে গ্রামের উৎপাদিত ফসল নিয়ে বিকিকিনি করে বাড়ি ফিরতেন।
ঠিক পাহাড়ি গ্রামের গরুবাথান হাট (Di Hala Bhauju) ছিল খুব বিখ্যাত। তাই সপ্তাহের প্রথম দিন সোমবার মহিলার দল গরুবাথান হাটে দোকান সাজিয়ে জিনিসপত্র বিক্রি করে আবার বাড়ি ফিরে যান। এবং বাড়ির যাবতীয় কাজ ছিল পুরুষের দায়িত্বে। সংসার ধর্মের যাবতীয় কাজ ছিল পুরুষের হাতে।
তাই চিত্রটা একটু ভিন্ন। বাজারে-বাজারে পুরুষরা নাচ-গান করে মহিলার দোকানে গিয়ে বৌদির দের কাছে কিছু অর্থের আবেদন করে।
শীতের রোদ ঝলমলে গরুবাথান। এখানকার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র সোমবারে বাজারে সকাল থেকেই সাপ্তাহিক হাট জমজমাট।
যে গান অনুরণিত হল পাহাড় জুড়ে। ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে এবারও অগ্রণী ভূমিকা নিল তরুণ প্রজন্ম।
এলাকার জনশ্রুতি বলছে, বহু পূর্বে সাধারণত এখানকার পুরুষদের আয়ুষ্কাল সে রকম বেশি হত না। ফলে হাট-দোকান সামলাতেন মহিলারাই।
মাঝ পর্বে নানা সমস্যা এসেছে। তবুও এই বিশেষ ঐতিহ্য রক্ষার ক্ষেত্রে চেষ্টার ত্রুটি রাখা হচ্ছে না। এবারও স্থানীয়দের উদ্যোগেই দি হালা ভাউজু (Di Hala Bhauju Hat) হাট হল। আয়োজক কমিটিতে অগ্রণী ভূমিকায় এগিয়ে এসেছেন তরুণ প্রজন্ম। কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় প্রধান এলাকার তরুণ মুখ। সঞ্জয়বাবু বললেন, একসময় বিশ্বায়নের প্রভাবে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যর ওপরেই পড়েছে। আমরা যে কোনও ভাবেই হোক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করতে চাই। এর জন্যই আমরা দি হালা ভাউজু হাট (Di Hala Bhauju Hat)-এর আয়োজন করেছি।
এবারও ঠাকুরবাড়ি মন্দিরের পুজো হয়। নাচ-গান করে সকলেই হাট-বাজার ঘুরেছেন। সোমবারে বাজারের পাশে মঞ্চ গড়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এখানে মারুনি নাচ, ঢেউসি, মাদল গীত, নেওয়ারি নৃত্য, নাটক ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রুদ্র কারকি দি হালা ভাউজু হাটের বিশেষত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। এলাকার বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং হাস্য কবি উইলিয়াম ফিফন, স্থানীয় যুদ্ধবীর বেসিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ পারিয়ার প্রমুখ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। আয়োজক কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা কাশীরাম প্রধান বলেন, হাট (Di Hala Bhauju Hat) এবং উৎসবে ভালো সাড়া মিলেছে।
গরুবাথান হাটে এদিন দোকান দিয়েছিলেন মালবাজারের বিপুল হালদার। বিপুলবাবু বলেন আমরাও দিহালা ভাউজু হাট (Di Hala Bhauju Hat)-এর অপেক্ষা করে থাকি। দারুণ অনুভূতি হয়।