আজই খুলছে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বার। ৩০ এপ্রিল, অক্ষয় তৃতীয়ার শুভ দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্দির উদ্বোধন করবেন। এদিন অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দেব।
সোমবার থেকে আচার অনুষ্ঠান শুরু হয়। ২৯ এপ্রিল অর্থাত্ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় মহাযজ্ঞ। তার জন্য এক কুইন্টাল আম কাঠ সংগ্রহ করা হয় রামনগর ও এগরা ব্লক থেকে। দেশের নানা তীর্থস্থান থেকে মঙ্গল কলসে করে আনা হয় জল। মন্দির চত্বর হয়ে উঠেছে এক মহোৎসবের কেন্দ্র।
মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার আচার শুরু হয়েছে ২৮ এপ্রিল রাত থেকেই। মূল পুজোয় যুক্ত রয়েছেন ইসকনের ৬০ জন সন্ন্যাসী, এবং পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সহ ৩৫ জনের একটি বিশেষ দল।
এই মন্দিরের নির্মাণকাজে জড়িত রাজস্থানের ৮০০ কারিগর। এই জগন্নাথধামের প্রবেশদ্বার চারটি। সিংহদ্বারে কালো রঙের ৩৪ ফুট লম্বা ১৮ মুখী অরুণ স্তম্ভ।
মন্দিরের ভিতরের আচার বিধি অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে পালন করা হচ্ছে। ৩০ এপ্রিল সকালে অনুষ্ঠিত হবে দেববিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা। সেই মুহূর্তটি থাকবে মাত্র ২০ মিনিট, সকাল ১১টা ১০ মিনিট থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।
এরপর জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তিতে স্নান, বস্ত্র প্রদান, এবং অর্পণ করা হবে ৫৬ প্রকার ভোগ। থাকছে গজা, প্যাঁড়া, রসগোল্লাসহ নানা মিষ্টান্ন। দুপুর আড়াইটে থেকে ৩টের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী দ্বার উন্মোচন করবেন। এরপরই সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে যাবে মন্দিরের দরজা।
মন্দির তৈরি হয়েছে রাজস্থানের গোলাপি বেলেপাথরে, পুরীর আদলে। ভেতরে রয়েছে লক্ষ্মী মন্দির, ভোগমণ্ডপ, নাটমন্দির, গরুড় স্তম্ভ ও জগমোহন। মূল গর্ভগৃহে বিরাজ করছেন পাথরের মূর্তিতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা।
তবে পুজো হবে নিমকাঠের মূর্তিতে। সিংহদ্বার, অশ্বদ্বারসহ রয়েছে মোট চারটি প্রবেশপথ। সিংহদ্বারের সামনে দাঁড়িয়ে ১৮ মুখী অরুণস্তম্ভ, যার মাথায় অরুণদেবের মূর্তি।
পুরো দিঘা শহর সাজানো হয়েছে রঙিন আলোয়। মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে তিনদিনের উৎসব। আমন্ত্রিত ১২ হাজার মানুষের জন্য রয়েছে যাতায়াতের বিশেষ ব্যবস্থা, উত্তরীয়, ব্যাজ ও প্রসাদ বিতরণের আয়োজন।
রাজ্যবাসীর জন্য এটি এক গর্বের মুহূর্ত। এই মন্দির শুধুই ধর্মীয় নয়, পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ হিসেবেও দিঘাকে এক নতুন পরিচয় দেবে।