ভুটান পাহাড়ে (Bhutan Hill) প্রবল বর্ষণের জেরে ভেসে গিয়েছে হলং নদীর সেতু। ফলে বন্ধ হয়ে গেল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কার সাফারি। এর জেরে বিপাকে পড়েছেন অনলাইনে টিকিট কেটে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে কার সাফারি করতে যাওয়া দেশ-বিদেশের কয়েকশ পর্যটক। যেহেতু হাতি সাফারি আগে থেকেই বন্ধ ছিল, আর এখন কার সাফারিও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল জঙ্গল সাফারি।
ভুটান পাহাড়ে অবিরাম ভারি বর্ষণের জরে জলদাপাড়ার হলং নদী সহ আলিপুরদুয়ারের একাধিক নদীতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। হলং নদীর প্রবল জলচ্ছ্বাসে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জলদাপাড়ারর ভিতর একশৃঙ্গ গণ্ডারের তৃণভূমির অধিকাংশ অংশ হলং নদীর জলের তলায় চলে গিয়েছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে জলদাপাড়া বনদফতর।
বুধবার সকালে আগাম কোন নোটিশ ছাড়াই জলদাপাড়া জাতীয় (Jaldapara National Park) কর্তৃপক্ষ কার সাফারির বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। ফলে জলদাপাড়ায় কার সাফারির জন্য অনলাইনে আগাম টিকিট বুকিং করে বেড়াতে আসা কয়েকশো পর্যটক বিপাকে পড়ে যান।
এই বিষয়ে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও জানিয়েছেন, 'হলং নদীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কার সাফারি বন্ধ রাখা হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় জঙ্গলে নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় বন্যপ্রাণীরা এখন বিরক্ত। তাই জঙ্গলে মানুষ ঢুকলে ওরা আরও বিরক্ত হতে পারে। সেই কারণে কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আপাতত কার সাফারি বন্ধ থাকবে।'
তবে আচমকাই কার সাফারি (Jaldapara Car Safari) বন্ধের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ছড়িয়েছে পর্যটকমহল ও জলদাপাড়া লজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে।
জলদাপাড়া লজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জগন্নাথ সাহা বলেন, প্রচুর মানুষ অনলাইনে টিকিট কেটে বেড়াতে এসেছেন। তাদের বঞ্চিত করছে উদ্যান কর্তৃপক্ষ। গোটা জঙ্গল জলমগ্ন নয়। পর্যটকদের অন্তত হরিণডাঙা টাওয়ারে নিয়ে যাওয়া যেত। কারণ ওখানে কোনও নদীর জল নেই। যেহেতু পর্যটকরা বহু আশা নিয়ে বেড়াতে এসেছেন, তাই তাঁদের ওই টাওয়ারে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যেত। বনদফতরের এমন সিদ্ধান্তে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এদিকে সিদ্ধান্ত মণ্ডল নামে এক পর্যটক বলেন, 'পুজোর ছুটিতে অনেক আগে থেকে অনলাইনে কার সাফারির টিকিট কেটে বেড়াতে এসেছিলাম। কিন্তু বনদফতর সেই সাফারি বন্ধ করে দিয়ে আমাদের বঞ্চিত করেছে। আমাদের হরিণডাঙা টাওয়ারে যাওয়ার ছাড়পত্র তাঁরা দিতেই পারতেন। কিন্তু সেটা তাঁরা করলেন না। অনলাইনের টাকা কবে ফেরত পাবো সেটা নিয়েও কিছু জানায়নি জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ।'
অন্যদিকে সমতল ও ভুটান পাহাড়ে অবিরাম বর্ষণের জেরে জেলার ৪ টি নদীতে হলুদ সংকেত জারি করল আলিপুরদুয়ার (Alipurdur) জেলা সেচদফতর। তোর্ষা নদীর জলস্ফীতিতে ভেঙে গিয়েছে জয়গাঁ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬০০ মিটার নদী বাঁধে। গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়া মেচিয়া বস্তি এলাকার একটি গ্রামে তোর্ষার জল ঢুকে বিপর্যস্ত কমপক্ষে ২০টি পরিবার।