দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (Southwest Monsoon) এ বার নিজের 'টাইমিং'-এর আগেই ছন্দে। আবহাওয়া দফতরের (IMD) পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ অর্থাত্ ২৪ মে থেকেই বর্ষা ঢুকে পড়েছে কেরল, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, মিজোরাম ও পুদুচেরিতে। এবার লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ।
আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই বাংলার দক্ষিণ অংশে এবং সাব-হিমালয়ান পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়তে পারে বর্ষা। মৌসুমী বায়ুর এই অস্বাভাবিক আগমন ঘিরে স্বস্তিতে কৃষক সমাজ, উৎসাহে আবহবিদেরা।
সাধারণত ১০ জুন নাগাদ পশ্চিমবঙ্গে ঢোকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। কিন্তু এবছর দক্ষিণ ভারত থেকে যে গতিতে এগোচ্ছে বর্ষা, তাতে প্রায় দুই সপ্তাহ আগেই বাংলায় পৌঁছে যেতে পারে সেই বহু প্রতীক্ষিত বৃষ্টি। ইতিমধ্যেই মিজোরামে ঢুকে পড়েছে মৌসুমী বায়ু। ফলে উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে সরে এসে এর পরবর্তী গন্তব্য—সাব-হিমালয়ান পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় এবং উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে। এর পর ধীরে ধীরে তা নিয়মিত মৌসুমী বৃষ্টিতে রূপ নেবে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর অগ্রগতির ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা নিচ্ছে বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা ও নিম্নচাপের প্রবণতা। বঙ্গোপসাগরের জলতলের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি, ফলে বায়ু প্রবাহ দ্রুত তৈরি হচ্ছে। সেই সঙ্গে দক্ষিণ আরব সাগরের দিক থেকেও একটি শক্তিশালী নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে, যা বর্ষাকে এগিয়ে আনতে সহায়ক।
আবহাওয়াবিদদের মতে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর অগ্রগতির ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা নিচ্ছে বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা ও নিম্নচাপের প্রবণতা। বঙ্গোপসাগরের জলতলের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি, ফলে বায়ু প্রবাহ দ্রুত তৈরি হচ্ছে। সেই সঙ্গে দক্ষিণ আরব সাগরের দিক থেকেও একটি শক্তিশালী নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে, যা বর্ষাকে এগিয়ে আনতে সহায়ক।
প্রথম দফায় জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কালিম্পং ও কোচবিহারের মতো উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে বর্ষা ঢুকবে। এর সঙ্গে সঙ্গেই পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, কলকাতা ও ঝাড়গ্রাম জেলাতেও আর্দ্রতাজনিত মেঘলা আবহাওয়া তৈরি হবে। কিছু এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
বর্ষা যতই কাঙ্ক্ষিত হোক না কেন, হঠাৎ করে বেশি বৃষ্টি শুরু হলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে কৃষির উপর। বিশেষ করে ধান চাষের ক্ষেত্রে সময়ের আগে জল জমে গেলে চারার ক্ষতি হতে পারে। তবে প্রাক্বর্ষার এই বৃষ্টি সাধারণত মাটিকে আর্দ্র করে দেয়, যা চাষের জন্য ইতিবাচক। রাজ্যের কৃষি দফতরও কৃষকদের সতর্ক থাকতে বলেছে—বীজ রোপণের সময় যেন বৃষ্টির উপর নির্ভর করে না নেওয়া হয়।
আবহাওয়াবিদেরা মনে করছেন, মৌসুমী বায়ুর সঙ্গে প্রথম দিকে বজ্রবিদ্যুৎ ও ঝোড়ো হাওয়ার প্রবণতা থাকবে। ফলে আগামী কয়েকদিন চলবে বজ্রপাতের সতর্কতা। বিশেষ করে বিকেল-সন্ধ্যাবেলা ঘন কালো মেঘ ও বজ্র-চমকের আশঙ্কা থেকে যাবে।
বর্ষার আগমন নিয়ে আর অপেক্ষা নেই। পশ্চিমবঙ্গে সময়ের আগেই ঢুকে পড়তে পারে মৌসুমী বায়ু। সঙ্গে থাকবে প্রথম বৃষ্টির ঘ্রাণ, কিছুটা ঝোড়ো হাওয়া আর প্রচণ্ড আর্দ্রতার সঙ্গে লড়াই। তবে কৃষির জন্য এই বর্ষা স্বস্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে—যদি না তা হঠাৎ অতিবৃষ্টি হয়ে দাঁড়ায়। এখন অপেক্ষা কয়েকটা দিনের, তার পরেই হয়তো শহর জুড়ে গর্জে উঠবে বৃষ্টি।