দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পর্যটকদের মতোই পরিযায়ী পাখিদের কাছেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চল। তাই প্রতি বর্ষার শুরুতেই উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে ভিড় করে হাজির দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পরিযায়ী পাখির দল।
বিদেশি পরিযায়ী পাখি নয়। বর্ষার শুরুতেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিযায়ী পাখিরা ভিড় জমায় গোটা উত্তরবঙ্গের বিস্তির্ণ জঙ্গলে।
তবে উত্তরবঙ্গের জঙ্গল গুলোর মধ্যে ভুটান সীমান্ত লাগোয়া আলিপুরদুয়ার জেলার বক্সা টাইগার রিজার্ভের ঘন বর্ষা বন সবচেয়ে পছন্দের আবাসস্থল দেশের পরিযায়ী পাখিদের কাছে।
সাধারণ শীতকালেই পরিযায়ী পাখিদের উপর নজর থাকে পাখি প্রেমিদের। তবে এই বর্ষাতেও দেশের বিভিন্ন রাজ্যের কমবেশি ৪০ টির বেশি প্রজাতির পরিযায়ী পাখি চলে এসেছে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে।
দেশের এই পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে রয়েছে প্যারাডাইস ফ্লাইক্যাচার,ব্ল্যাক ন্যাপ মনার্ক,অরেঞ্জ হেডেড থ্রাস,এ ছাড়াও উত্তরের গ্রাম বাংলার পরিচিত পাখিদের মধ্যে অন্যতম বৌকথা কও,চাতক,দুই ধরনের বাঁশপাতি পাখিও চলে আসছে উত্তরবঙ্গে।
একটি গবেষণায় জানা গেছে, উত্তরবঙ্গ থেকে যেমন গ্রীষ্মের মরসুমে উত্তর ভারতের দিকে হুডেড পিট্টা উড়ে যায়,তেমনি ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইন্ডিয়ান পিট্টা উত্তরবঙ্গে চলে আসে। এক্কেবারে লোকালয়েও পৌঁছে যায় তারা।
ন্যাফের কোয়ার্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন,আমাদের এখানে গ্রীষ্ম ও বর্ষার মরসুম প্রায় একসাথেই চলে। শীতকালে যেমন বিভিন্ন মহাদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের পাখি চলে আসে তেমনি এপ্রিল থেকে জুলাই, আগষ্ট মাস পর্যন্ত দেশের পরিযায়ী পাখিরা উত্তরবঙ্গে চলে আসে।
এছারাও দক্ষিণ ভারতের,হিমালয়ের উঁচু এলাকা থেকে সমতলে নেমে আসে কিছু পাখি। আলিপুরদুয়ার বার্ডার্স ক্লাবের সদস্য শিবুন ভৌমিক বলেন,ব্লু টেল বিইটার আমাদের এখানে খুব পরিচিত একটি পরিযায়ী পাখি।
বর্ষার শুরুতেই চার পাঁচ মাসের জন্য তারা অতিথি হয়ে চলে আসে উত্তরবঙ্গে।
মূলত খাদ্য সংগ্রহ, বাসা তৈরি, ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে তারা ফিরে যায়। অনিমেষ বসু বলেন,গ্রীষ্মের মরসুমে যে পাখিরা চলে আসে তাদের জন্য প্রকৃতি নির্দিষ্ট করে রেখেছে কিছু গাছের ফল,ফুল,পোকামাকড়। তারা যেখান থেকে উড়ে আসে সেখানে নিশ্চয় সে সবের অভাব হয়। গোটা বিষয়গুলি নিয়েই গবেষণার প্রয়োজন।আপাতত দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ ভারত এবং উপদ্বীপ ভারত থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে পাখিরা চলে আসছে।