কেন্দ্রের সাধারণতন্ত্র দিবসের (Republic Day) অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের ট্যাবলো বাদ দেওয়া নিয়ে বিতর্কের মাঝেই দিল্লিতে পট পাঠাতে দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার পট শিল্পীদের। এই রাজ্যের পিংলাতে তৈরি পট দিল্লীতে পাঠাতে দেখা গেল সেখানকার পটুয়াদের ৷ ৩২ জন পটুয়া কয়েকমাস ধরে বিশাল আকারের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাস বর্নিত এই পটগুলি (Pattachitra) তৈরি করেছেন৷ শুরু হয়েছে পাঠানোর পর্বও৷
গোটা কর্মকাণ্ডের নেপথ্যে প্রধান শিল্পী হলেন পিংলার বাহাদুর চিত্রকর৷ ৫০ ফুট লম্বা ও ৬ ফুট চওড়া মোট ৬টি পটচিত্র তৈরি করা হয়েছে৷ সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লীর রাজপথে যে অনুষ্ঠান হবে, সেখানে দেড় কিলোমিটার রাস্তার দুধারে দেশের বিভিন্ন শিল্পীদের ক্যানভাস থাকবে ৷ সেখানেই স্থান পাবে পিংলার পটুয়াদের হাতে তৈরি স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বর্ণিত এই পটচিত্রগুলি ৷
পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার নয়া গ্রামের পটুয়াদের পট এখন বিশ্বের সম্মান আদায় করে নিয়েছে। সেই পটুয়াদের তৈরি বিশাল আকারের ৬টি পটই এবার স্থান পাচ্ছে দিল্লীতে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে৷
দায়িত্ব পাওয়া প্রধান পটুয়া বাহাদুর চিত্রকর বলেন, 'কয়েকমাস আগে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে একটি ফোন এসেছিল৷ জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিভিন্ন ঘটনাবলী সম্বলিত পট এঁকে দিতে পারবো কি না? যা সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে লাগানো হবে৷ সেই শুনে প্রথমে কিছুটা থমকে গেলেও পরে হ্যাঁ বলেছিলাম ৷ এরপর আমরা ৩২ জন কারিগর মিলে প্রস্তাব মতো পট তৈরি করে ফেলেছি৷'
কি রয়েছে সেই পটচিত্রে? জানা গিয়েছে সেই পটে রয়েছে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম বৃত্তান্ত, ক্ষুদিরামের বড়লাটকে মারার পরিকল্পনা থেকে ফাঁসি, মাতঙ্গিনী হাজরার ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ইতিহাস, সিধু কানুর বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, তিতুমীরের লড়াইয়ের মতো ঘটনা ৷
সমস্তটাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ৫০ ফুট লম্বা ৬ ফুট চওড়া ৬টি পটে। নিখুঁতভাবে তৈরি পটগুলি পাঠানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে ৷ তবে এই কাজ করে শিল্পীদের মধ্যে আনন্দ থাকলেও, মনের কোণে কোথাও একটা দুঃখও রয়েছে।