ইউরোপ ও চিনের মতো এবার আলিপুরদুয়ার জেলার হাসপাতালগুলিতেও চালু হচ্ছে করোনা প্রি-ফেব্রিকেটেড শয্যা। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের পাশাপাশি আরও সাতটি গ্রামীণ হাসপাতালেও এই শয্যা চালু হবে বলে জানা গিয়েছে। গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে ২০টি করে এই প্রি-ফেব্রিকেটেড শয্যা দেওয়া হবে। অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে হবে দেওয়া হবে ১০০টি শয্যা। এর জন্য বাইরে থেকে প্রি-ফেব্রিকেটেড শয্যার স্ট্রাকচারও আনা হবে। এই শয্যা বসানোর জন্য ইতিমধ্যেই হাসপাতালগুলির পড়ে থাকা খালি ঘর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। হাসপাতালগুলির পরিত্যক্ত ঘরও মেরামত করছে পূর্তদফতর দিয়ে। এই প্রি-ফেব্রিকেটেড বেডের স্ট্রাকচার আনা ও হাসপাতালগুলির খালি ঘর মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।
হাসপাতালগুলিতে পূর্তদফতরের এই কাজ কতদূর এগিয়েছে তা নিয়ে বুধবার জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা, আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক ভবন ডুয়ার্সকন্যায় স্বাস্থ্য ও পূর্তদফতরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এদিন জেলাশাসক বলেন, প্রি-ফেব্রিকেটেড শয্যার (Prefabricated Beds) জন্য হাসপাতালগুলিতে জায়গা বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। পূর্তদফতর হাসপাতালগুলিতে এই শয্যা বসানোর কাজ করবে।
আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার ৬টি ব্লকে ৬টি গ্রামীণ হাসপাতাল আছে। অতিরিক্ত হিসাবে আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকে ভাটিবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালও রয়েছে। সাতটি গ্রামীণ হাসপাতালে ২০টি করে মোট ১৪০টি ও আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ১০০টি, অর্থাৎ মোট ২৪০টি প্রি-ফেব্রিকেটেড শয্যা বসানো হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। করোনা মোকাবিলায় নিযুক্ত উত্তরবঙ্গের ওএসডি ডা: সুশান্ত রায় বলেন, এই প্রি-ফেব্রিকেটেড শয্যাগুলি ইউরোপ ও চিনের মডেলে তৈরি হবে। এই স্ট্রাকচারগুলি ১৫ বছর পর্যন্ত চলে। গরমের সময় শয্যাগুলির ভিতরের তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে অনেকটা কম থাকে।
করোনা সংক্রমণের দাপট এখন অনেকটাই কম। জেলায় করোনা সংক্রমণের গ্রাফ একেবারেই নিম্নমুখী। দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর ভিড়ের পরেও আলিপুরদুয়ার জেলায় সংক্রমণ এখনও বাড়েনি। তবে ছটপুজোর ভিড়ের জেরে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্যদফতর। করোনা রোগী না থাকায় স্বাস্থ্যদফতর তপসিখাতা কোভিড হাসপাতাল অনেকদিন আগেই বন্ধ করে দিয়েছে। এখন একজন মাত্র করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে। জেলায় করোনার প্রতিষেধকের ২টি ডোজ দেওয়ার কাজও প্রায় শেষের পথে।
তাহলে হাসাপাতালগুলিতে কেন প্রি-ফেব্রিকেটেড শয্যার এই ব্যবস্থা? এই প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, করোনা সংক্রমণ আগামী দিনে বাড়বে নাকি কমবে সেটা আগাম বলা যায় না। তাই ভষিব্যতের কথা ভেবেই এই শয্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাছাড়া শুধু করোনা নয়, অন্যান্য রোগীদের রাখতেও এই শয্যাগুলিকে আগামিদিনে কাজেও লাগানো যাবে।