Father And Mother Marriage : সকাল থেকেই বাাড়ি সাজো সাজো রব। তুমুল ব্যস্ত পরিবারের লোকেরা। কারণ আজ বিয়ে বলে কথা। কিন্তু এই বিয়ে আবার বাকি ৫টা বিয়ের মতো কিন্তু নয়। কারণ বিয়ে হচ্ছে বাবা-মায়ের। হ্যাঁ শুনতে অবাক লাগলে আদতে তাই হয়েছে আজ।
আজ ৭০ তম বিবাহবার্ষিকী ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জ থানার বেলিয়াপুকুর এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ সরকারের। কিন্তু এমন দিনটি অভিনব করে রাখতে আজব উপায় খুঁজলেন সন্তান থেকে নাতি-নাতনিরা। বাবা এবং মায়ের বিয়ে ফের নতুন করে দেওয়ার উদ্যোগ নিলেন তাঁরা। পরিবারের দাবি, বিশ্বনাথের বয়স চলতি বছরে ১০০ পেরিয়েছে।
বিশ্বনাথ সরকার ও সুরোধনী সরকার এর ৬ ছেলে ও ৩ মেয়ে নিয়ে সংসার । বিয়ে হয়ে গিয়েছে সব ছেলে মেয়েদের। কাজের সূত্রে সবাই এখন বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু ছেলেমেয়েরা ভোলেনি তাঁদের বাবা মায়ের বিবাহবার্ষিকী। বাবা মাকে তাঁদের বিবাহবার্ষিকী স্মরণ করিয়ে রাখতে আজকের দিনেই আবারো নতুন করে বাবা মায়ের বিয়ের ব্যবস্থা করলেন ছেলে মেয়েরা।
নিয়ম করে বাবার পৈতৃক বাড়ি ভগবানগোলা থানার বামুনিয়া গ্রামে মাকে রেখে আসেন ছেলে মেয়েরা। আর বাবাকে বরের বেসে সাজিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে বসিয়ে মাকে আনতে হাজির ছেলে মেয়েরা।
অন্যদিকে সুরোধনী সরকার ও রীতিমতন নতুন হলুদ রঙের তাতের শাড়ি পরে মাথায় টোপর দিয়ে বউ এর বেশে অপেক্ষা করছেন তাঁর বরের জন্য । রীতিমতন ধুমধাম করে বাবা মায়ের বিয়ে দিলেন ছেলে মেয়েরা। প্রায় ৭০০ অতিথিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ধুম ধাম করে বিয়ে দিলেন বাবা মায়ের।
বিশ্বনাথ সরকার এর চতুর্থ পুত্র বলেন যে আমি কর্মসূত্রে দিল্লি তে পরিবার সহ থাকি। একদিন হঠাৎ করে আমার স্ত্রী আমাকে বলেন বাবা মায়ের আবার নতুন করে বিয়ে দেওয়ার কথা, প্রথমে শুনে একটু কেমন লাগলেও, পরে আমার বাকি ভাই বোনদের সঙ্গে কথা বলি। তারাও রাজি হয়ে যান।
বিশ্বনাথ সরকার ও সুরোধনী সরকার এর চতুর্থ বউমা গীতা সরকার বলেন, বর্তমান সময়ে এইভাবে কোনও দম্পতি একসঙ্গে ৭০ বছর কাটাচ্ছে এইরকম খুব কম দেখতে পাওয়া যায়। এখন বিয়ের কয়েক বছর এর মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে , অনেক সম্পর্ক নষ্ট হয়েও যাচ্ছে । এই সময় এই সম্পর্ক বর্তমান সমাজের কাছে উদহরণ হয়ে থাকবে।
নাতনি পায়েল সরকার বলেন, আমি তো খুব আনন্দ আছি যে আমি আমার ঠাকুমা ও ঠাকুরদার বিয়েতে বরযাত্রী যেতে পারছি , নিজের হাতে ঠাকুমাকে সাজিয়ে দিতে পেরেছি।
অপরদিকে বিশ্বনাথ সরকার ও সুরোধনী সরকারের নাত জামায় সমর মন্ডল তো খুব খুশি এই নতুন ভাবে বিয়ে হওয়াতে। তিনি বলেন যে আমি যেইদিন থেকে শুনেছি সেইদিন থেকে আমি তারিখ গুনছি যে কবে আসবে। বিয়ের জন্য তৈরি ছাদনাতলা থেকে শুরু করে সবকিছুই নিয়ম পালন করা হলেও পুরোহিত ছিলেন না বিয়েতে।