গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এলো হস্তিশাবক। রেসকিউ সেন্টারের টিউবয়েলে হাতলে শুঁড় পেঁচিয়ে চাপ দিতেই বেরিয়ে এলো জল।
দিব্যি খোশমেজাজে তৃষ্ণা মেটালো হস্তি শাবকটি। এমন দৃশ্য তো রোজ দেখা যায় না! তাই রেসকিউ সেন্টারের কর্মীদের মধ্যে একজন গোটা ঘটনাটি মোবাইল বন্দি করলেন।
তাকে মোবাইল বন্দী করা হচ্ছে বেশ বুঝতে পেরেছে হস্তিশাবক টি। তাইজল খাওয়ার মাঝে আড় চোখে ক্যামেরার লেন্সের দিকে তাকিয়ে মাঝে মধ্যেই দেখে নিয়েছে সে।
সেন্টার অব অ্যাট্রাকশন যে সে নিজেই, বুঝে নিতে বেশি সময় লাগেনি সেয়ানা বাচ্চাটির। তাই জলদি করে জল খাওয়া সেরে নিয়েছে সে। কিংবা আরও জল খাওয়ার ছিল, খাওয়া হল না। হতেও পারে!
তাকে নিয়ে হুড়োহুড়ি-হইচই পড়ে যেতে পারে বুঝে গিয়েছিল সে। তাই সেলিব্রিটির কায়দাতেই দ্রুত জলপান শেষ করে গুটিগুটি নিজের ঠিকানার দিকে রওনা দিল।
হস্তি শাবক এর নিজের হাতে কল পাম্প করে জল খাওয়ার ভিডিও এখন ভাইরাল। হাতে হাতে ভিডিও ঘুরতে ঘুরতে এখন সত্যিই সে সেলিব্রিটি।
সোমবার আলিপুরদুয়ার জেলার জলদাপাড়া সেন্ট্রাল পিলখানার ঘটনা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে হাতিটির বয়সে ১ বছর ৯ মাস।
বছর দুয়েক আগে একটি গর্ভবতী মাদী হাতি দলছুট হয়ে পড়লে, বনদপ্তরের লোকেরা রেসকিউ করে সেন্ট্রাল পিলখানায় আশ্রয় দিয়েছিল।
এই শাবকটির জন্ম এই পিলখানাতেই। তবে মানুষের সংস্পর্শে থাকায় এদের বনে ফেরানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। দু একবার চেষ্টা যে করা হয়নি তা নয়।
তবে একবার মানুষের কাছে থাকলে পুরনো সঙ্গীদের ফিরিয়ে নেয় না হাতির দল। তাই এগুলিকে কুনকি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটিও হয়তো ভবিষ্যতে কুনকি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
তবে তার প্রশিক্ষণ যে ঠিক পথেই চলছে, তা প্রমাণিত বলে মজা করে দাবি করেছেন রেসকিউ সেন্টারের আধিকারিকদের একাংশ।
যেভাবে মানুষের মতো কলে চাপ দিয়ে জল বের করছে, আর পরে আবার শুঁড়ে করে সেই জল পান করছে, তা রীতিমতো চমকপ্রদ।
অন্য সময় যখন সেন্টারের কর্মীরা জল পান করার জন্য বা অন্য় কাজে কল পাম্প করেছে, দূরে দাঁড়িয়ে দেখেছে সে। এদিন সুযোগ মেলায় নিজের বুদ্ধি ও বিদ্যে কাজে লাগিয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
তবে হাতির এমন বুদ্ধি এই প্রথম নয়। হাতির স্মৃতি ও বুদ্ধি নিয়ে বহু লোকগাথা প্রচলিত আছে জনমানসে। উপকার করলে যেমন সে মনে রাখে, তেমনই তিরস্কার করলেও ভোলে না।