রাজ্য় রাজনীতিতে ঘটে গিয়েছে বড়সড় পরিবর্তন। প্রায় তিন বছর লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে প্রকাশ্য়ে এলেন বিমল গুরুং। তাও খাস কলকাতায় গাড়ি করে ঘুরে বেড়ালেন দেশদ্রোহিতার আইনে অভিযুক্ত।
২০১৭ সালের পর এই প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেল প্রাক্তন মোর্চা সুপ্রিমোকে। ৩ বছর পর ফের প্রকাশ্যে দেখা গেল তাকে। সঙ্গে দেখা মিলল রোশন গিরিরও। কলকাতার গোর্খা ভবনের সামনে হাজির হয়েছিলেন তিনি। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে সেখানে অপেক্ষা করার পর করুণাময়ীর দিকে রওনা হয়ে যান গুরুং।
২০১৭ সালের পর থেকে হন্যে হয়ে রাজ্য পুলিশ বিমল গুরুং, রোশন গিরি-সহ বেশ কয়েকজন মোর্চা নেতাকে খুঁজছিল। সেই সময় বিমল গুরুং সহ একাধিক মোর্চা নেতার বিরুদ্ধে বেআইনি অস্ত্র মজুত করা-সহ একাধিক মামলা রুজু করা হয়। এরপরই দার্জিলিং ছেড়ে ফেরার হয়ে যান বিমল গুরুং, রোশন গিরি-সহ মোর্চার বেশকিছু শীর্ষ নেতৃত্ব।
পুলিশের কাছে খবর ছিল তাঁরা দার্জিলিং সংলগ্ন সিকিমের দিকে গা ঢাকা দিয়েছেন। এরপরই ২০১৭ সালের অক্টোবর পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে দার্জিলিং সংলগ্ন পাতলেবাসে বিমল গুরুংয়ের বাড়ি থেকে AK-47, ৯-এমএম পিস্তল ও বোমা তৈরির মশলা বাজেয়াপ্ত করে। বিমলপন্থীদের অভিযোগ ছিল, রাজ্য পুলিশ অভিসন্ধি করেই সেখানে ওই অস্ত্র রেখে তাদের ওপর দোষারোপ করছে।
এরপরই সিকিম থেকে দার্জিলিঙে ঢোকার চেষ্টা করে বিমল গুরুং সহ একাধিক ফেরার নেতা। সেই সময় কাকভোরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। দুই পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারায় এএসআই অমিতাভ মালিক। আহত হন আরও কয়েকজন পুলিসকর্মী।ফের গা ঢাকা দেন বিমল। এদিকে, সন্ত্রাস ছড়ানো ও পুলিশকর্মী হত্যার মতো গুরুতর ধারা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা রুজু করে রাজ্য সরকার।
মাঝে কয়েকবার ভিডিও বার্তায় মমতা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দেন বিমল। কিন্তু তাতে রাজ্য সরকার রাজি হয়নি। তাদের একমাত্র লক্ষ্য বিমল গুরুংয়ের গ্রেফতারি। পঞ্চমীতে হঠাৎই ঝাড়খণ্ডের নম্বর প্লেট লাগানো একটি গাড়িতে কলকাতার গোর্খা ভবনের সামনে হাজির হন তিনি। পরে জানান, বিজেপি পাহাড়ে প্রতিশ্রুতি রাখেনি যা রেখেছে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তাই ২১-এর নির্বাচনে তিনি তৃণমূলের পাশে থাকবেন।