Mamata Banerjee on Digha Temple: রথ-রাজনীতিতে জোরদার পুরী VS দিঘা, মমতার দাবি, ওড়িশার মানুষও দিঘায় আসছেন

দিঘার জগন্নাথ মন্দির নিয়ে নানা বিষয়ে আপত্তি রয়েছে ওড়িশা সরকারের। এই নিয়ে নিজের স্পষ্ট বক্তব্য দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি ওড়িশাকে পছন্দ, ওড়িশা থেকে বহু মানুষ দিঘার জগন্নাথ মন্দির দেখেত এসেছেন, আমি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরকে সম্মান করি, আপনারাও দিঘার মন্দিরকে সম্মান করুন।'

Advertisement
রথ-রাজনীতিতে জোরদার পুরী VS দিঘা, মমতার দাবি, ওড়িশার মানুষও দিঘায় আসছেন'ওড়িশার মানুষ জগন্নাথ মন্দির দেখতে আসছেন', বললেন মমতা


দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর প্রথম রথযাত্রা। যা নিয়ে তুঙ্গে উৎসাহ উদ্দীপনা। হাজার হাজার ভক্ত সমাগম হবে বলেই মনে করছে প্রশাসন। বুধবারই দিঘায় পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দিঘার রথযাত্রার নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে জগন্নাথ মন্দির ট্রাস্ট কমিটির সঙ্গে প্রস্তুতি বৈঠক সারেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দিরের ৭ নম্বর গেট দিয়ে বেরিয়ে ৩ নম্বর গেট পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যান তিনি। সেখানেই একাধিক মন্ত্রী ও হিডকোর ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে ফিতে ধরে রাস্তার সঙ্গে রথের মাপ খতিয়ে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রী – অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সুজিত বসু এবং স্নেহাশিস চক্রবর্তী। রথযাত্রার প্রস্তুতি দেখার পাশাপাশি এদিন কিছুক্ষণের জন্য  সাংবাদিক বৈঠকও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে নির্বাচন কমিশনের ‘ডিক্লারেশন ফর্ম’ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি দিঘা-পুরী নিয়ে বিতর্কের প্রসঙ্গও তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

দিঘার জগন্নাথ মন্দির নিয়ে নানা বিষয়ে আপত্তি রয়েছে ওড়িশা সরকারের। এই নিয়েও নিজের স্পষ্ট বক্তব্য দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি ওড়িশাকে পছন্দ, ওড়িশা থেকে বহু মানুষ দিঘার জগন্নাথ মন্দির দেখেত এসেছেন, আমি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরকে সম্মান করি, আপনারাও দিঘার মন্দিরকে সম্মান করুন। ' সেইসঙ্গে মমতা যোগ করেন, 'আমি শাস্ত্র বুঝি না, মানুষ বুঝি। মানুষই শাস্ত্র তৈরি করে, দিঘায় পুজো করছেন শাস্ত্র জানা লোকেরাই। রাজেশ  দৈতাপতি প্রাণ প্রতিষ্ঠার সময় এখানে ছিলেন, তিনি পুরীর একজন দৈতাপতি। ওঁরা আমার নামে এফআইআর করেছে, আমি পাল্টা করিনি, এটাই মহত্ব।' 

প্রসঙ্গত, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে ঘিরে বিতর্ক চলছে। এই নিয়ে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি সরাসরি চিঠি লিখেছিলেন  পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর অনুরোধ, দিঘার মন্দিরকে 'জগন্নাথ ধাম' নামে যেন না ডাকা হয়। চিঠিতে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, পুরী জগন্নাথ ধাম শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় স্থান নয়, এটি ওড়িশার মানুষের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আবেগের প্রতীক। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন , দিঘার মন্দিরকে 'জগন্নাথ ধাম' বলা হলে সাধারণ ভক্তদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হবে এবং ওড়িশাবাসীর ভাবাবেগে আঘাত লাগতে পারে। মোহন চরণ মাঝি তাঁর চিঠিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন, রাজ্যের সদ্য নির্মিত দিঘার জগন্নাথ মন্দির থেকে 'ধাম' সরিয়ে ফেললে ভাল হয়। এদিন দিঘা নিয়ে সেই বিতর্কের উত্তর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রথযাত্রার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে দুপুর দেড়টা নাগাদ দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। কী ভাবে তিনটি রথ এগোবে, ভিড় কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা নিয়ে একটি বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, ইসকনের রাধারমণ দাস।  মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শুক্রবার রথের দিন সকাল থেকেই জগন্নাথ মন্দির খোলা থাকবে। সেই সময় দর্শনার্থীরা মন্দিরে যাওয়ার সুযোগও পাবেন। পাশাপাশি, সকাল ৯টা থেকে রথযাত্রার প্রস্তুতি এবং উপাচারও শুরু হয়ে যাবে। অত্যধিক ভিড়ের কারণে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না-ঘটে, সেই কারণে রথ চলার সময় সাধারণ মানুষকে ব্যারিকেড টপকে রাস্তায় নামতে দেওয়া হচ্ছে না। দুপুর ২টোয় রথে আরতি এবং পুজো শুরু হবে। আড়াইটে নাগাদ মন্দির থেকে রথযাত্রা শুরু হবে। পৌনে এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রথ পৌঁছোবে মাসির বাড়ি। বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 
 

POST A COMMENT
Advertisement