scorecardresearch
 

Cyclone Dana Digha-Puri Alert: পুরী, দিঘা বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান ছিল? ঘূর্ণিঝড় 'দানা'-র গতিবিধিটা জেনে নিন

ছুটি পেলেই দিঘা-পুরী ছোটেন এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। এদিকে সামনেই সপ্তাহান্তের ছুটি। অনেকেই এই ছুটি সমুদ্র সৈকতে কাটাবেন এমনটাই প্ল্যান করে রেখেছিলেন। কিন্তু ঘর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সেসব ভেস্তে যেতে বসেছে। ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। তার আগেই পর্যটকদের সতর্ক করে পুরী ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে ওড়িশা সরকার। রাজ্য প্রশাসন এই ঘোষণা করতেই ‘দানা’র আতঙ্কে নীলাচল ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে পর্যটকদের মধ্যে।

Advertisement
ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’

ছুটি পেলেই দিঘা-পুরী ছোটেন এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। এদিকে সামনেই সপ্তাহান্তের ছুটি। অনেকেই এই ছুটি সমুদ্র সৈকতে কাটাবেন এমনটাই প্ল্যান করে রেখেছিলেন। কিন্তু ঘর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সেসব ভেস্তে যেতে বসেছে। ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। তার আগেই পর্যটকদের সতর্ক করে পুরী ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে ওড়িশা সরকার। রাজ্য প্রশাসন এই ঘোষণা করতেই ‘দানা’র আতঙ্কে নীলাচল ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে পর্যটকদের মধ্যে। 

  ঘূর্ণিঝড় দানার ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আবহাওয়া দফতরের দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিমি হতে পারে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা। মৌসম ভবনের তরফে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে সেখানে জানানো হয়েছে, ২২ অক্টোবর অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হবে। এবং বুধবার তা শক্তিবৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ধীরে ধীরে ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোবে। এরপর পুরী, কটক, ভদ্রক সহ বিভিন্ন উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে আছড়ে পড়বে। এদিকে বাঙালির অন্যতম বেড়ানোর ডেস্টিনেশন পুরী। সারা বছরই জগন্নাথধামে ভিড় জমান বাঙালিরা। বুধবার থেকেই ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব পড়তে পারে পুরীতে। ফলে চিন্তা বাড়ছে বাঙালি সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত পর্যটকদের। 

পুরীতে কী কী সতর্কতা জারি করা হয়েছে?
ঘূর্ণিঝড় দানা-র প্রভাবের জন্য সৈকত শহর পুরী মঙ্গলবারের মধ্যেই কার্যত পর্যটকশূন্য করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার বিকেল থেকে কোনও পর্যটককে পুরীতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এছাড়াও পুরী ও সংলগ্ন এলাকার স্কুলগুলিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অফিসারদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সব হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে আপদকালীন পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় থেকে পর্যটকদের রক্ষা করতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ওড়িশা সরকারের তরফে। এই বিষয়ে ওড়িশার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী সুরেশ পুজারী  জানিয়েছেন, পুরীতে যে সব পর্যটকরা রয়েছেন তাঁরা যেন অতি দ্রুত শহর ছাড়েন। তবে যাঁরা ফিরতে পারবেন না তাঁদের জন্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কথাও জানানো হয়েছে।  পর্যটকদের কাছে রাজ্য প্রশাসন অনুরোধ করেছে, নিরাপত্তার স্বার্থে বুধবারের মধ্যে তাঁরা যেন পুরী ছাড়েন। এ ছাড়াও ২৪ এবং ২৫ অক্টোবরের মধ্যে যে সব পর্যটক পুরীতে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, ওই সময়ে তাঁরা এই সফর এড়িয়ে গেলেই ভাল। স্থানীয় সূত্রে খবর, পুরীর সমুদ্র ক্রমে উত্তাল হচ্ছে। পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। সাইরেন বাজিয়ে পর্যটকদের সতর্ক করার পাশাপাশি মাইকে ঘোষণাও চলছে। পুরীর সৈকতে লাইফগার্ডের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। হাওয়ার তেজ বাড়ছে। সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতাও বাড়ছে। আরও এক পর্যটক জানিয়েছেন, পুরীর সমুদ্র উত্তাল। লাইফগার্ডেরা পর্যটকদের সমুদ্রের ধারে যেতে নিষেধ করছেন।

আরও পড়ুন

Advertisement

ওড়িশা সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে ওড়িশায় সবথেকে বেশি পর্যটক গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে। ২০১৯ সালে সেখানে পর্যটকের সংখ্যা ছিল মোট ১ কোটি ৫৩ লাখ ৭ হাজার ৬৩৭ জন। যার মধ্যে ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৭০ জন ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে। যা মোট পর্যটকের ১৪ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২০ সালে অর্থাৎ করোনাকালে মোট ৬ লাখ ৪৮ হাজার ১২৪ জন বাঙালি ওড়িশা বেড়াতে গিয়েছিলেন। যা সেই বছরের মোট পর্যটকের ১৪.০২ শতাংশ। এরপর পরবর্তী বছরগুলিতেও বাঙালি পর্যটকের সংখ্যা উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানেও সেখানে প্রচুর বাঙালি পর্যটক রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। দানা-র প্রভাবে যাতে কোনও পর্যটকের কোনও ক্ষতি না হয় তার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে ওড়িশা সরকার। ওড়িশা সরকারের তরফে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় দানা-র জন্য কেউ বিপদে পড়লে ওই কন্ট্রোল রুমে ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগ করতে পারেন। যার নম্বর ১৯২৯ এবং ৭৮০৯৮৯৬৬২১। এছাড়াও ৭২টি ট্রানজিট সেল্টার তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি ওড়িশা পর্যটন দফতরের যে হোটেলগুলি রয়েছে সেখানেও পর্যটকদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

দিঘায় পর্যটকদের সৈকতে নামা বন্ধ এখন থেকেই
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব পশ্চিমবঙ্গের উপকূরবর্তী অঞ্চলেও পড়তে চলেছে।  আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট অনুসারে, বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় । বিশেষত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূলবর্তী এলাকায় বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।  পাশাপাশি মৎস্যজীবীরা যাতে গভীর সমুদ্রে আর না যায় সেজন্য চলছে মাইকে সতর্কীকরণ । মাঝ সমুদ্রে যে সমস্ত ট্রলারগুলি রয়েছে তাদের দ্রুত ফিরে আসা নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।  অপরদিকে রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থান দিঘাতেও চলছে সতর্কতামূলক প্রচার। দড়ি দিয়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে সৈকত। কোনও পর্যটক যাতে সমুদ্রতীরে না যেতে পারেন, সেদিনকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। পর্যটকদের নামতে দেওয়া হচ্ছে না সমুদ্রে । তৎপর সিভিল ডিফেন্স, লুনিয়া,  ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম।  দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের পক্ষে সতর্ক  করা হচ্ছে। হোটেল সংগঠনের সঙ্গে আলোচলার পর পর্যটকদের সতর্ক করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলা করার জন্য  তৈরি  রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন ।  

Advertisement