কদিন আগেই ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার ঢোকানোর অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভূতুড়ে ভোটার নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি সংক্রান্ত অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে চম্পাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পিয়ালী ৪১ নম্বর বুথ ও চম্পাহাটি ২৬ নম্বর বুথে।
ভোটার তালিকায় দেখা গিয়েছে ৪,৫০০ ভূতুড়ে ভোটার
অভিযোগ, লোকসভা ভোটের পর ২০২৫-এ ভোটার তালিকায় দেখা গিয়েছে ৪,৫০০ ভূতুড়ে ভোটার। ভোটার তালিকা নিয়ে বাড়ি বাড়ি নতুন করে স্ক্রুটিং শুরু চম্পাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মিতালী গায়েন মণ্ডলের। বারুইপুরের পূর্ব বিধানসভা চম্পাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনি করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে ভূতুড়ে কাণ্ড। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন তালিকায় এমন ভোটারও রয়েছেন, যাঁদের কোনও অস্তিত্ব নেই, যাঁদের কেউ চেনেন না। মালদা, মুর্শিদাবাদ, শিলিগুড়ির লোকজনের নাম উঠে এসেছে ভোটার তালিকায়। তাঁদেরকে সনাক্তকরণের চেষ্টা চালান হচ্ছে।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভূতুড়ে ভোটারদের নাম খোঁজার চেষ্টা করছেন
২৬ নম্বর বুথের সদস্য উপপ্রধান মিতালী গায়েন মণ্ডল বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভূতুড়ে ভোটারদের নাম খোঁজার চেষ্টা করছেন। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন তালিকায় এমন অনেক নাম রয়েছে, যাঁদের তাঁরা চেনেন না। এদিকে চম্পাহাটি বিজেপির জেলা অফিসের সেক্রেটারি শ্যামল মজুমদার বলেন, যে শাসকদল ক্ষমতায় রয়েছে, তাদের হাতেই তো সবকিছু। তারাই তো এইভাবে ভোটার সংখ্যা বাড়িয়েছে। এই বিষয়ে তাদের দেখা উচিত। বিজেপির উপরে দোষ চাপিয়ে নিজেদের দোষ ঢাকার চেষ্টা করছে।
৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে ভোটার বেড়ে হয়ে গিয়েছে
সূত্রের খবর,গত লোকসভা নির্বাচনে পঞ্চায়েত এলাকার ভোটার সংখ্যা ছিল সাড়ে ১৮ হাজার থেকে ১৯ হাজার। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়। ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে ভোটার বেড়ে হয়ে গিয়েছে ২২ হাজার ৪০০। এরপর স্ক্রুটিনি করতে গিয়ে নজরে আসে ভূতুড়ে ব্যাপার। পঞ্চায়েতের ২৫টি সংসদের মধ্যে কোনও বুথে বেড়ে গিয়েছে ২০০ ভোটার, আবার কোনও বুথে বেড়েছে ৩০০ ভোটার, কোথাও আবার ভোটার বেড়েছে ১৫০ ভোটার।
ভোটার তালিকা ধরে করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে পঞ্চায়েতের ৪১ নম্বর বুথে গত লোকসভা ভোটে ভোটার সংখ্য্য ছিল ১,০৫৩ জন। এবার তা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে হয়েছে ১,৩৫৭ জন। পাশাপাশি ২৬ নম্বর বুথেও একই ঘটনা। গ্রামবাসীদের জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা জানান, যাদের নাম শুনছি, তাঁদের এলাকায় কোনও অস্তিত্ব। এঁদের কারুর বয়স ৬৬, তো কারও ৬০ বছর বয়স। ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম আছে তাঁদের একজনকে ফোন করে জানা যায়, তাঁর নাম রাজু শেখ, বাড়ি মালদার ইংলিশ বাজার। আর এই সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষিতেই উঠছে প্রশ্ন।
রিপোর্টার: প্রসেনজিত্ সাহা