Mamata Banerjee Warns Murshidabad TMC Leader: সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনার পর সোমবার মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে তিনি জোর দেন শান্তি বজায় রাখা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং জেলার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর।
এই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলায় সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনায় কড়া অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ঘটনাগুলিকে "পরিকল্পিত হিংসা" বলে অভিহিত করেন এবং দলীয় নেতাদের কড়া নির্দেশ দেন—এই ধরনের বিশৃঙ্খলা ভবিষ্যতে যেন আর না ঘটে। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “মুর্শিদাবাদে এই ধরনের উসকানি কীভাবে ঘটল? এই জেলা তো বরাবরই তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত!”
গত মাসে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর পর এই প্রথম মুর্শিদাবাদে এলেন মমতা। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি এই হিংসায় জড়িত দুষ্কৃতীদের রক্ষা করছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বাধা দিচ্ছে। কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে দুপুরে বহরমপুর পৌঁছে সরাসরি সার্কিট হাউস থেকে জেলা প্রশাসনিক ভবনে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি স্থানীয় বিধায়ক, পৌরসভার চেয়ারম্যান, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ আবু তাহের খান, জেলা পরিষদের চেয়ারপারসন এবং অন্যান্য শীর্ষ জেলা ও দলীয় নেতাদের সঙ্গে ৩৫ মিনিটের বৈঠক করেন।
এক জ্যেষ্ঠ তৃণমূল নেতা জানান, “মুখ্যমন্ত্রী খুব চিন্তিত ছিলেন যে কীভাবে জেলায় উত্তেজনা সৃষ্টি হল। তিনি আমাদের স্পষ্টভাবে বলেন—নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের সদা সতর্ক থাকতে হবে। সেই সঙ্গে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।”
সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা নেতৃত্বকে একটি ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন, যা দলীয় সংগঠন পরিচালনার পাশাপাশি জেলার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। বৈঠকে উপস্থিত ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদে বিজেপি যে নোংরা রাজনীতি করছে তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে অশান্তি তৈরি করছে।” তবে বৈঠকে উপস্থিত এক বিধায়ক জানান, সাম্প্রতিক বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য হুমায়ুন কবীরকে মিডিয়ার সামনে কথা বলার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
একজন জ্যেষ্ঠ দলীয় নেতা জানান, “সুতি ও সামশেরগঞ্জে সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনায় ভুয়ো প্রচার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী খুব ক্ষুব্ধ ছিলেন। তিনি স্পষ্ট জানান—অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “শান্তি ভঙ্গের কোনও চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না, অপরাধী যারই হোক না কেন, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”