scorecardresearch
 

দিল্লিতে সাংসদদের নিয়ে তৎপর মমতা-অভিষেক, গরহাজির সেই শিশির-দিব্যেন্দু

তৃণমূলের সাংসদদের দলে দেখা মিলছে না দলের দুই সাংসদ শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারীর। যদিও ইতিমধ্যে শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোঘী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছে তৃণমূল। তবে শিশিরবাবুর ছেলে তথা তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে নিয়ে সেই বিতর্ক নেই। তবে সংসদে বাদল অধিবেশন চললেও কাঁথির বাইরে দেখা যাচ্ছে না দিবব্যেন্দুকে। উল্টে তমলুকের প্রয়াত বাম নেতার স্মরণসভায় বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে একমঞ্চে থেকে নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছেন তিনি।

Advertisement
সংসদ অধিবেশনে গরহাজির  শিশির-দিব্যেন্দু সংসদ অধিবেশনে গরহাজির শিশির-দিব্যেন্দু
হাইলাইটস
  • বাদল অধিবেশনের মধ্যে দিল্লিতে তৃণমূলনেত্রী
  • বুধবার দলীয় সাংসদদের নিয়ে বৈঠক মমতার
  • এদিকে অধিবেশনে গরহাজির শিশির-দিব্যেন্দু

সংসদে বাদল অধিবেশনের মধ্যে সোমবার রাতে দিল্লিতে পা রেখেছেন  বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের ভোটে নজির গড়ার পর এবার যে তৃণমূলনেত্রীর লক্ষ্য ২০২৪-এর ভোটে দিল্লি থেকে বিজেপিকে উৎখাত করা, তাতে কোনও ধোঁয়াশা নেই। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। সংসদের প্রথম দিন থেকেই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি-গ্যাসের দাম বাড়া-সহ একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধতে শুরু করেছেন তৃণমূল সাংসদরা। প্রতিদিন নিয়ম করে সংসদ চত্বরে চলছে বিক্ষোভ প্রদর্শন। তবে সাংসদদের সেই দলে দেখা মিলছে না দলের দুই সাংসদ শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারীর। যদিও ইতিমধ্যে শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে  দলত্যাগ বিরোঘী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছে তৃণমূল। তবে  শিশিরবাবুর ছেলে তথা তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে নিয়ে সেই বিতর্ক নেই। তবে সংসদে বাদল অধিবেশন চললেও কাঁথির বাইরে দেখা যাচ্ছে না দিবব্যেন্দুকে। উল্টে তমলুকের প্রয়াত বাম নেতার স্মরণসভায় বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে একমঞ্চে থেকে নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: ধানসভা প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন, সংসদে মিমি-নুসরত-দেবদের কী খবর?

দেশের মানুষের কাছে দলের অবস্থান তুলে ধরতে এবার সাংসদদের ওপর বিশাল দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সংসদে নিজেদের অবস্থান ও গেমপ্ল্যান নিয়ে তৃণমূল এমপিদের  সঙ্গে  বারবার বৈঠকে বসতে দেখা যাচ্ছে ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২১ জুলাই শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান শেষ করে রাতেই দিল্লি গিয়েছেন অভিষেক। পরদিন থেকেই শুরু করে দেন বিভিন্ন কর্মসূচি। ২২ জুলাই দু’দফায় বৈঠক করেন দলের সাংসদদের সঙ্গে। প্রথমে সকালে সংসদের দলীয় দফতরে। পরে দুপুরে রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়ের বাড়িতে। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রশান্ত কিশোর, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি যশবন্ত সিনহাও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরের প্রাক্কালে আরও একবার দলীয় সাংসদদের নিয়ে বৈঠকে বসেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাঁচদিনের মধ্যে এই নিয়ে তৃতীয়বার সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন অভিষেক। 

Advertisement

 

 

 এই বৈঠকের এক আলাদা তাৎপর্য রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ এই প্রথম সংসদের কোনও মিটিং রুমে বসল তৃণমূল সাংসসদের বৈঠক। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সময়ে সংসদের মিটিং রুমে এই ধরনের বৈঠক করে থাকে। তবে এতদিন সংসদে তৃণমূলের যাবতীয় বৈঠক হয়েছে নিজেদের দলীয় দফতরে। এই প্রথম অন্যান্য সর্বভারতীয় দলগুলির মতো সংসদের কোনও মিটিং রুমে বৈঠক করতে করলেন তৃণমূল সাংসদরা। এছাড়া করোনা আবহ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক দলের সংসদের মিটিং রুমে বৈঠক হল। শোনা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দিল্লিতে  দলীয় সাংসদদের নিয়ে আলাদা করে বৈঠক করবেন। গত সপ্তাহেই তৃণমূলের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।পেগাসাস-কাণ্ড থেকে পেট্রল-ডিজেলের চড়া দাম- সব বিষয় নিয়েই সংসদে মোদী সরকারকে আক্রমণ শানাচ্ছে তৃণমূল। সেই আক্রমণ আরও ঝাঁঝাল করতেই দলীয় সাংসদদের নিয়ে বুধবার রাজধানীতে বসতে চলেছেন তৃণমূলনেত্রী। গত লোকসভা ভোটে বাংলা থেকে ২২ জন সাংসদ পেয়েছে তৃণমূল। এঁদের মধ্যে ২ জন অধিবেশনের শুরু থেকেই অনুপস্থিত। পিতা-পুত্র শিশির এবং দিব্যেন্দু চলতি অধিবেশন যোগ দেবেন এমন সম্ভাবনাও কম।

আরও পড়ুন: পাখির চোখ ত্রিপুরা! আগামী মাসে কোন প্ল্যান নিয়ে বিপ্লব গড়ে অভিষেক ?

গত বিধানসভা ভোটের আগে অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদীর সমাবেশে দেখা গিয়েছিল কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীকে। শিশিরবাবু খাতায় কলমে এখনও তৃণমূলে আছেন ঠিকই, তবে তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের তরফে লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে সাংসদ পদ খারিজের জন্য পিটিশন জমা দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে শিশির অধিকারী বাদল অধিবেশনে যোগ দেবেন না বলেই খবর। এই নিয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে তিনি নাকি চিঠিও দিয়েছেন। 

বাবা শিশির অধিকারীকে বিজেপির সমাবেশে দেখা গেলেও ছেলে দিব্যেন্দুর ক্ষেত্রে কিন্তু এমন কোনও ঘটনা নেই। তবুও বাদল অধিবেশনে তাঁকে দেখা যাচ্ছে না দিল্লিমুখী হতে। গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারেও দলের হয়ে  তাঁকে ময়দানে নামতে দেখা যায়নি। সংসদে  গরহাজির  থাকা তমলুকের সাংসদকে বরং সম্প্রতী দেখা গিয়েছে প্রয়াত সিপিএম নেতা নির্মল জানার স্মরণসভায়। যেখানে আবার হাজির ছিলেন স্বয়ং বিমান বসু। বামেদের মঞ্চে দিব্যেন্দুর উপস্থিতি নতুন করে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এদিকে দিল্লি না যাওয়ার কারণ হিসাবে দিব্যেন্দু বৃদ্ধ বাবা-মার অসুস্থতাকে দেখাচ্ছেন। তবে এটাও শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের অন্য কোনও নেতৃত্বের সঙ্গেই তাঁর তেমন যোগাযোগ নেই। 

 

 

গত ডিসেম্বরে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই অধিকারী পরিবারের অন্যান্যদের মতো দিব্যেন্দুর সঙ্গেও তৃণমূলের কোনও যোগাযোগ নেই। মাঝে দিব্যেন্দুকে চিঠি দিয়েছিলেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরও বরফ গলেনি। এদিকে তৃণমূল ছাড়ার পর থেকেই লাগাতার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে এসেছেন শুভেন্দু। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বেড়েছে। গত দু'মাসে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে একাধিকবার দিল্লিতে যেতে দেখা গেছে শুভেন্দুকে। এমনকি গত শুক্রবার ফের একবার নয়াদিল্লি পাড়ি দেন তিনি। এমনকি হাজির হন সংসদভবনেও। এদিকে প্রাক্তন সহকর্মীকে নিয়ে নাম না করে একাধিকবার কড়া বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই আবহে ভোটের ফলাফলে বিজেপি-র বিপর্যয়ের পর থেকে কাঁথি ও তমলুকের দুই সাংসদ তৃণমূলে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। 

Advertisement


 

Advertisement