বিপন্ন আমসত্ত্ব শিল্প
সরকারি অবহেলা,অনিয়মিত আবহাওয়া, প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা আর রাজ্যে লকডাউন পরিস্থিতিতে বিপন্ন মালদার ঐতিহ্যবাহী আমসত্ত্ব ও তার সঙ্গে যুক্ত কারিগররা।
অফ সিজনে আমের স্বাদ মেটাতে জুড়ি মেলা ভার
এক সময় মালদার আমের খ্যাতি ছিল জগৎজোড়া। আর তার এই খ্যাতি অর্জনে যোগ্য ভূমিকা পালন করত মালদার তৈরি সুমিষ্ট আমসত্ত্ব।
ঘরেই পচছে আমসত্ত্ব
কিন্তু বর্তমান অনিয়মিত আবহাওয়া,সরকারি উদাসীনতা আর অবহেলা সর্বোপরি লকডাউন পরিস্থিতিতে মালদার বাইরে আমসত্ত্ব পাঠাতে না পেরে বেহাল মালদা বিখ্যাত আমসত্ত্ব শিল্প। বিপুল ক্ষতির মুখে এই মিষ্টি মধুর আমসত্ত্ব তৈরীর কারিগররা। সকলেই চান, এই অসহায় অবস্থায় সরকার পাশে দাঁড়াক তাদের।
না হলে হয়তো ধীরে ধীরে কমে আসা এই আমসত্ত্ব তৈরিতে আগ্রহ হারাবে জেলা।
এক সময়ের রমরমা আজ আর নেই
এক সময় মালদার ইংরেজবাজার থানা কোতোয়ালি সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রামের মানুষ, বিশেষত মহিলারা এই আমসত্ত্ব তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন বছরের বেশ কয়েকটা মাস। তাদের তৈরি আমসত্ত্বের কদর ছিল খুব। রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে ভারতের বিভিন্ন জায়গা ছাড়াও ভিন দেশে রফতানি হতো মালদায় তৈরি এই আমসত্ত্ব।
এখন টিমটিম করে টিঁকে আমসত্ত্বের কারিগররা
কিন্তু এখন সে সব ইতিহাস। কোতুয়ালি, আড়াপুর, কল্যাণপুরের মাত্র কয়েকঘর মানুষ এখন এই পেশার সাথে যুক্ত। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায় সঙ্গে তারা আজও মগ্ন এই কাজে।
প্রচুর আমের দরকার
এক কেজি আমসত্ত্ব তৈরি করতে প্রয়োজন হয়, উন্নত মানের ৩৫ থেকে ৪০ কেজি আম। এরপরে আছে প্রক্রিয়াকরণ এবং শ্রমিকদের খরচ। তারপরে যে দামে কারিগররা তাদের তৈরি আমসত্ত্ব বিক্রি করতে পারছেন, তাতে খুব একটা লাভের মুখ দেখছেন না তাঁরা। উন্নত মানের আম, কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায় তৈরি হয় আমসত্ত্ব।
সরকারি উদাসীনতা অব্যাহত
কিন্তু এখনও নেই এই শিল্পে কোন সরকারি প্রশিক্ষণ। নেই বাজারজাত করার ব্যবস্থা। বহু আবেদনেও মেলেনি সরকারি ব্যবস্থায় উন্নত প্যাকেজিং বা প্রক্রিয়াকরণের কোনও সহজ সুবিধা। তাই ধীরে ধীরে অনেকেই আগ্রহ হারাচ্ছেন এই আমসত্ত্ব তৈরিতে। কারণ খরচের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মিলছে না মুনাফা। ধীরে ধীরে চাহিদা কমে যাওয়া। সরকারি সাহায্য না থাকা। এবং অনিয়মিত আবহাওয়া ছাড়াও রাজ্যে বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতিতে চরম দুর্দশা আর অসহায় তাই দিন কাটাচ্ছেন মালদার আমসত্ত্ব তৈরির কারিগররা।