বিছানায় উঠে ঘুমন্ত অবস্থায় মা ও দুই মেয়েকে ছোবল মারল কালাচ সাপ। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মৃত্যু হয়েছে একটি শিশুর। নাম হালিমা সর্দার। বয়স ছ'বছর। সালেমা সর্দার নামে ওই মহিলা ও তাঁর বড় মেয়ে হালিমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রবিবার ক্যানিং থানা এলাকার নিতারিঘাটা গ্রামপঞ্চায়েতের পাঙ্গাশখালি গ্রামের ঘটনা।
জানা গিয়েছে, ছালেমা বাড়িতে দুই মেয়ে হালিমা ও রেশমার সঙ্গে ঘুমোচ্ছিলেন। রাত দুটোর সময় পায়ে কিছু কামড়ানোর অনুভূতি হওয়ায় আচমকাই তাদের ঘুম ভেঙে যায়। লাইট জ্বেলে দেখেন, বিছানায় একটি কালাচ সাপ। তিনজনের চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। সাপটিকে ধরার চেষ্টা করলেও সেটি পালিয়ে যায়। ততক্ষণে তিনজনের শরীরেই ভয়াবহ বিষ ঢেলে দিয়েছে কালাচ সাপ।
এরপরেই অসুস্থ তিনজনকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে, ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়াতেই বিপদ বাড়ে। অনেকটা সময় নষ্ট হয় ওঝার বুজরুকিতে। ফলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই তিনজন। বেগতিক দেখে তাদের ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা শুরু হয়। তবে ২৫টি অ্যান্টি ভেনম ইঞ্জেকশন দিয়েও সালেমা বিবির ছোট মেয়ে, হালিমাকে বাঁচানো যায়নি। তাঁর অবস্থায় খারাপ। ক্যানিং হাসপাতালে এখনও তিনি চিকিৎসাধীন। এদিকে ১২ বছরের কিশোরী রেশমাকে কলকাতা আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
জানা গিয়েছে, ওই মহিলার স্বামী রাজ্জাক সর্দার পরিযায়ী শ্রমিক। আন্দামানে থাকেন। ঘটনার কথা জানতে পেরে রাজ্জাক আন্দামান থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
উল্লেখ্য, কালাচ সাপের বিষের প্রভাব সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যায় না। অনেকঘণ্টা পর শরীরে প্রভাব ফেলতে থাকে ওই সাপের বিষ। প্রথমেই শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক কাজ বন্ধ করে দেয় ওই বিষ। বিকল হয়ে যেতে থাকে কিডনি-সহ একাধিক প্রতঙ্গ। সঙ্গে সঙ্গে ডায়ালেসিস চালু করতে হয় চিকিৎসকদের। সেই সঙ্গে চলে সাপের বিষের প্রতিষেধক প্রয়োগ। কিন্তু এক্ষেত্রে ওঝার কাছে অনেকটা সময় চলে যাওয়ায় শিশুটির অবস্থা গুরুতর হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দ্রুত হাসপাতালে আনা গেলে ওই শিশুটিকে হয়ত বাঁচানো যেত।