
একে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। তার উপর আবার টর্নেডো। সব মিলিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াল রূপের সাক্ষী হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। বুধবার সন্ধ্যায় মারাত্মক শক্তিশালী টর্নেডো (Tornado) আছড়ে পড়ে হুগলিতে। প্রায় ৫০টি বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। সঙ্গে দুজনের মৃত্যু। কলকাতাতেও টর্নেডোর সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।
এখন টর্নেডো কী? ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোনের সঙ্গে টর্নেডোর পার্থক্য কোথায়?
টর্নেডো ও সাইক্লোন, দুটোই ঝড়। সাইক্লোন হল, একটি বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে হয়। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলি ট্রপিক্যাল সাইক্লোন। সাধারণত, নিম্নচাপ গভীর থেকে গভীরতর হয়ে আরও শক্তি বাড়িয়ে সাইক্লোনের রূপ নেয়।
টর্নেডো হল, একটি হাওয়ার কলাম। একটু নির্দিষ্ট এলাকাজুড়ে সেই কলাম তৈরি হয়। অনেকটা সাপ ফনা তুললে যেমন দেখতে লাগে। টর্নেডো বিধ্বংসী হয়। একটি নির্দিষ্ট এলাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকে।
সাইক্লোন সাউদার্ন হেমিস্ফিয়ারে ঘড়ির কাঁটার দিকে ও নর্দান হেমিস্ফিয়ারে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘোরে হাওয়া। একই রকম বৈচিত্র টর্নেডোর ক্ষেত্রেও।
শক্তির নিরিখে
সাইক্লোন সাধারণত অত্যন্ত শক্তিশালী হয়। ঝড়ের গতিবেগ ৩০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা ছুঁতে পারে। যেমনটা দেখা গিয়েছিল আমফানের ক্ষেত্রে। ২৬৫ কিমি গাস্টিং স্পিড উঠেছিল।
টর্নেডো সাধারণত কম শক্তিশালী হয়। আবার বেশি শক্তিও ধারণ করে। শক্তির নিরিখে ফুজিতা (F), এনহ্যান্সড ফুজিতা (EF) ও TORRO (T)-- এই তিনটি স্কিলে ভাগ করা হয় টর্নেডোকে।
বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি
সাইক্লোনের ক্ষেত্রে বৃষ্টি হবেই। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়। টর্নেডোর ক্ষেত্রে বৃষ্টির সঙ্গে শিলাবৃষ্টিও অনেক সময় দেখা যায়।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, হুগলিতে যে টর্নোডোটি হয়েছে, তার কারণ ইয়াস। ইয়াস আসার আগে পকেটে পকেটে এই ধরনের টর্নেডো দেখা মিলছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, হঠাৎ করে রাজ্যে এভাবে টর্নেডোর দেখা দেওয়াটা অস্বাভাবিক হলেও এটা নাকি ইয়াসেরই আগমন বার্তা।