সামাজিক অনুষ্ঠানে ভাড়ায় মিলবে হাওড়ার রেল মিউজিয়াম, শুরু বিতর্ক

এবার সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য নিজেদের মিউজিয়াম ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত রেলের। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই বেশকয়েকটি বাণিজ্যিক সংস্থা সাড়া দিয়েছে বলে জানান পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম। এর মূল উদ্দেশ্যই হল রেলের আয় বৃদ্ধি করা। যদিও রেলের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে দানা বেঁধেছে বিতর্ক।

সম্প্রতি যাত্রীভাড়া এবং মালবহন থেকে আয় কমেছে রেলের। তাই বিভিন্ন ডিভিশনকে আয়ের বিকল্প রাস্তা খোঁজার নির্দেশ দিয়েছে  রেল বোর্ডে। সেই মোতাবেক পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশন এবার রেল মিউজিয়ামকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত  নিয়েছে। এই বিষয়ে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম সুমিত নারুলা জানিয়েছেন, "রেলের আয় বাড়ানোর জন্য জন্মদিন সহ অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানের রেল মিউজিয়ামকে এবার থেকে ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "এই বিষয়ে কিছুদিন আগে দরপত্র ডাকা হয়। সেই দরপত্রে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক সংস্থা সাড়াও দিয়েছে। মিউজিয়ামের মধ্যে যে বাগানটি আছে সেখানে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।" 

এদিকে রেলের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। যেহেতু রেল মিউজিয়ামের (Rail Museum Howrah) মধ্যে ভারতীয় রেলের ইতিহাসকে তুলে ধরা হয়েছে, তাই সামাজিক অনুষ্ঠানে সেগুলির ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে বলেই মনে করছেন শহরবাসীর একাংশ। এখানে রেলের বিভিন্ন পুরনো মডেলের স্টিম ইঞ্জিন, পুরনো মডেলের কোচ, সিগন্যাল, চাকা ও লাইনের যন্ত্রাংশ সহ ট্রেনের দুস্প্রাপ্য ছবি আছে। মিউজিয়ামের মূল অংশে রয়েছে মিনি হাওড়া স্টেশন, বিভিন্ন কোচের মডেল, রেলের যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন স্থাপত্য এবং আস্ত টয়ট্রেন।
 
একই জায়গার মধ্যে বাগান এবং মিউজিয়াম থাকায় অনুষ্ঠানের ভিড়ে সেই সমস্ত জিনিসগুলির ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ও। তিনি অভিযোগ করেন, "এটা বেচারাম সরকার, সবকিছুই বেচতে চায়।" যেভাবে রেলের মিউজিয়াম সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে তার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, "এই সিদ্ধান্ত লজ্জার। মিউজিয়ামে কখনো সামাজিক অনুষ্ঠান হতে পারে না।" তিনি প্রশ্ন তোলেন, "রেলের কী এমন অর্থের প্রয়োজন হল যাতে মিউজিয়ামকে ভাড়া দিতে হচ্ছে?" বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনবেন বলেও জানান তিনি । উল্লেখ্য, ২০০১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই মিউজিয়াম তৈরি করা হয়। সারা বছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য দর্শক এই মিউজিয়াম দেখতে আসেন। ভারতীয় রেলের বিবর্তন জানতে এই মিউজিয়াম পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। করোনা আবহে মিউজিয়াম বন্ধ থাকায় এখন আর দর্শক খুঁজে পাওয়া যায় না। অন্যদিকে বিজেপির (BJP) রাজ্য কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, "বিশাল জায়গা রয়েছে রেল মিউজিয়ামে। সেখানে যদি রেলের আয় বাড়ানোর জন্য কিছুটা ভাড়া দেওয়া হয়, তাতে তো আপত্তির কিছু নেই। এটা খুবই ভাল উদ্যোগ।"