
আজ থেকে প্রায় ১৬৪ বছর আগে রামমোহন মল্লিক প্রতিষ্ঠা করেন কলকাতার মল্লিক ঘাটের ফুলের বাজার (Mullick Ghat Flower Market)। গঙ্গার তীরে, হাওয়া ব্রিজের কাছে এই বাজার অবস্থিত। প্রতিদিন অন্তত ২০০ জন ফুল বিক্রেতা এখানে বসেন। গঙ্গাতীরের মল্লিকঘাটের ঠিক পাশেই গড়ে ওঠা এই অস্থায়ী বাজারটি এশিয়ার বৃহত্তম ফুলের বাজার হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। শুধু দেশি-বিদেশি ফোটোগ্রাফাররাই নন, অজস্র পর্যটকও বিস্মিত চোখে পরখ করে যান এর প্রাণ এবং বিশালত্বকে। এবার গঙ্গার অপর পারে হাওড়াতেও গড়ে তোলা হবে এই ধরণের ফুল বাজার।
হাওড়াতেও এবার ফুল বাজার
হাওড়া ব্রিজের নীচে মল্লিক ঘটের ফুলের বাজার তিলোত্তমার শোভা দ্বিগুণ করেছে। ভারত তথা এশিয়ার এটি একটি বৃহত্তর ফুলের বাজার এটি। যদিও লোক মুখে ওই বাজারটি হাওড়া ফুল মার্কেট নামেই পরিচিত। সেখানে প্রতিদিন প্রায় ২০০ জন বিক্রেতা ফুল নিয়ে বসেন। তবে কলকাতার অপর পারে হাওড়াতে এই ধরণের ফুলের মার্কেট এখনো নেই। তাই ফুল ব্যবসায়ীদের যেতে হয় গঙ্গার অপর প্রান্তে মল্লিকঘাটের ফুলের বাজারেই। তবে ইতিমধ্যেই এই ফুলের বাজারের জন্য নির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করে পৌর নিগমের দল পরিদর্শন করে গেছেন। এই ফুল বাজার তৈরিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ ট্রান্সমিসন কর্পোরেশনের আর্থিক সাহায্য করবে বলেই পৌর নিগম সুত্রে খবর।
কোথায় তৈরি হবে এই ফুল বাজার?
বুধবার হাওড়া পৌর নিগমের প্রধান অফিসে এসে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ ট্রান্সমিসন কর্পোরেশনের কর্তারা পৌর নিগমের মুখ্য প্রশাসকের হাতে অগ্রিম এক কিস্তি অর্থ সম্বলিত চেক তুলে দেন। মোট তিনটি কিস্তি মারফৎ গোটা অর্থ দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। হাওড়া পৌর নিগমের মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী জানান রাজ্য সরকারের অধীনস্থ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ ট্রান্সমিসন কর্পোরেশনের আর্থিক সহায়তায় পৌর নিগমের নিজস্ব যে জায়গা রয়েছে বার্ন স্টান্ডার্ডের উল্টো পাড়ে সেখানেই তৈরি হবে এই ফুল বাজার। তিনি দাবি করেন এই বাজার তৈরি করতে পৌর নিগমকে কোনো খরচ করতে হচ্ছে না। গোটা পরিকল্পনার অর্থ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ ট্রান্সমিসন কর্পোরেশনের সিএসআর ফান্ড থেকেই আসবে। আজকে এজন্য অগ্রিম এক কোটি উনষাট লক্ষ টাকা তারা দিয়েছেন। আর দু-তিনমাসের মধ্যে মোট তিন কোটি টাকা তারা দেবেন। এই ফুল বাজার তৈরি হলে হাওড়া পৌর নিগমের ভালো রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে। ইতিমধ্যেই কলকাতা মল্লিক ঘাটের ফুল বাজারেও ফর্ম দেওয়া হয়েছে। সেখানে ফুল ব্যবসায়ীদের থেকে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় একশোর বেশি স্টল এখানে থাকবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি গোটা পরিকলনায় মল্লিক ঘাটের ফুল ব্যবসায়ীদের অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
কাজে লাগান হবে শুকিয়ে যাওয়া ফুল
শুকিয়ে যাওয়া ফুল থেকে ভেষজ রং তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। চাষিরা যাতে হাওড়ার এই জারে ফুল এনে রাখতে পারে তার জন্য নির্দিষ্ট স্টোরেজ ঘরও তৈরি করা হবে বলে জানান রাজ্য বিদ্যুৎ ট্রান্সমিসন কর্পোরেশনের কর্তারা পৌর নিগমের মুখ্য প্রশাসক। অত্যাধুনিক গুণমান বজায় রেখেই তৈরি হবে হাওড়া পৌর নিগমের নিজস্ব এই ফুল বাজার। এখানে রাজ্য সরকারের হটি কালচার বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে ফুল,বিভিন্ন ধরণের বীজের সামগ্রী ও সারও পাওয়া যাবে বলে সূত্রের খবর।