তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফেরার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন রাজ্যে গঠন করা হবে বিধান পরিষদ। সেই প্রতিশ্রুতি রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাস হল বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব। প্রায় অর্ধশতক পর ফিরছে বিধান পরিষদ।
জয়লাভের পর দলের অনেককেই মন্ত্রীত্ব দিতে পারেনি তৃণমূল। এরপরই দলনেত্রী জানান যে বিধান পরিষদ গঠন করে তাঁদের জায়গা করে দেওয়া হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের তৃতীয় সরকারের দ্বিতীয় মন্ত্রীসভার বৈঠকে বিধান পরিষদ নিয়ে সেই প্রস্তাবেই এদিন সিলমোহর দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকের নীতিমালায় অনুমোদন দেওয়ার জন্য ফোনে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয় বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব। যদিও এরপর বিল এনে সেখানে রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরই চূড়ান্ত অনুমোদন হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালের ২১ মার্চ পশ্চিমবঙ্গে বিধান পরিষদ অবলুপ্তির একটি প্রস্তাব পাস হয়। ১ অগস্ট এই পরিষদ অবলুপ্ত হয়। যুক্তফ্রন্ট সরকারের আমলে তুলে দেওয়া হয় সেই ব্যবস্থা। তবে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা এবং জম্মু ও কাশ্মীরে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার অস্তিত্ব কিন্তু রয়েছে।
১৯৩৫ সালে রাজ্যের আইনসভাকে দুটি কক্ষে ভাগ করা হয়। দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভার উচ্চ কক্ষের নাম বিধান পরিষদ এবং নিম্ন কক্ষ বিধানসভা। ভারতীয় সংবিধানের ১৭১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধানসভার সদস্য সংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বেশি হবে না আবার কোনও অবস্থাতেই তা ৪০-এর কমও হবে না, এমনটাই নিয়ম। স্বাধীনতার পর ১৯৫২ সালের ৫ জুন বিধান পরিষদের সদস্য আসন সংখ্যা করা হল ৫১ এবং বিধানসভার আসন সংখ্যা ২৪০।
বিধান পরিষদের কার্যকালের মেয়াদ ৬ বছর। প্রতি ৬ বছর অন্তর বিধান পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অর্থবিল ছাড়া যে কোন বিল বিধান পরিষদে আনা যায়। সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্যের মন্ত্রীসভা শুধুমাত্র নিম্নকক্ষ অর্থাৎ বিধানসভার কাছেই দায়বদ্ধ। ফলে শাসন সংক্রান্তও তেমন ক্ষমতা নেই বিধান পরিষদের।