বেশ কয়েক বছর বিরতির পর পুরনো দল তৃণমূলে ফিরলেন একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পয়লা নম্বর অস্ত্র মুকুল রায়। তারপর থেকেই তাঁকে ঘিরে হরেক রকম জল্পনা দানা বাঁধছে।
বিধায়ক পদ ছাড়ছেন মুকুল!
ইতিমধ্যেই তিনি বিজেপি থেকে জিতে আসা বিধায়ক পদ ছাড়তে পারেন বলে জানা গিয়েছে। দল বিরোধী আইনের গেরোয় না পড়তে চাইলে বিধায়ক পদ ছাড়তে হবে তাঁকে। ফলে তাঁর জেতা আসনে যেমন নতুন করে নির্বাচন হবে, তেমনই তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্য়ত কি ফের সাংগঠনিক কাজে নিযুক্ত হওয়ার দিকে ঝুঁকবে, তা নিয়ে জল্পনা থাকছেই।
দলবিরোধী আইন থেকে বাঁচতেই বিধায়ক পদে ইস্তফা দিতে পারেন
শেষ বিধানসভা নির্বাচনে ৭৫ জন বিজেপি প্রার্থী জিতে বিধায়ক হয়েছেন। এর মধ্যে মুকুল একা দল ছাড়লে তাঁকে দলত্যাগ বিরোধী আইনে অভিযুক্ত করতে পারে বিজেপি। ফলে ঝুঁকি এড়াতে বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়াই নিরাপদ। তাতে অযথা ঝুঁকি এড়ানোর পাশাপাশি নৈতিক দায় থেকেও মুক্ত হতে পারবেন তিনি।
রাজ্য সভার সাংসদ হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা
রাজ্যসভায় তৃণমূলের দুটি আসন এই মুহূর্তে খালি রয়েছে। দীনেশ ত্রিবেদী এবং মানস ভুঁইয়ার আসনদুটির যে কোনও একটিতে মমতা চাইলে মুকুলকে পাঠাতে পারে। মুকুলের ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, মুকুল রায়কে ফের রাজ্যসভার সাংসদ করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কৃষ্ণের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন!
পাশাপাশিই, দলীয় সংগঠনেও মুকুলবাবুকে বড় কোনও দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে আসন্ন পঞ্চায়েত ও পুর নির্বাচনে মুকুলবাবুই হবেন তৃণমূলের নির্বাচনী মহাভারতের কৃষ্ণ। সেই সঙ্গে ২০২৮ এর লোকসভা নির্বাচনে প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মুকুল দলকে এগিয়ে দিতে পারেন বলে বিশ্বাস করেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নির্বাচনের আগে থেকেই জল্পনা ছিল
নির্বাচনের আগে থেকেই জল্পনা ছিল তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন তিনি। এমনকী বিধানসভা নির্বাচনেও দাঁড়াতে চাননি। তবে বিজেপি যোগ্য প্রার্থী না পেয়ে তাঁকে টিকিট দেয়। তিনি নিজেও ভোটের প্রচারপর্বে বিরোধী তৃণমূলের বিরুদ্ধে তেমন আক্রমণাত্মক ছিলেন না। নিস্পৃহ থাকলেও তিনি নিজে অবশ্য জিতেছেন বিপুল ব্যবধানেই। বিজেপির চেয়ে তাঁর নিজস্ব নেটওয়ার্কই তাঁকে জয়ের পথে নিয়ে গিয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা। ভোটে বিজেপি-র বিপর্যয়ের পর থেকেই মুকুল-বিজেপি দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। বিভিন্ন বৈঠকে অনুপস্থিত থাকা, দলের সঙ্গে পরিকল্পনায় শামিল না হওয়ায় মুকুলের বিরুদ্ধে জল্পনা বাড়িয়ে তোলে।
মুকুল নিয়ে কি স্ট্র্যাটেজি নেবে বিজেপি?
চার বছরের পদ্ম শিবিরে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বারবারই মতপার্থক্যে জড়িয়েছেনষ দিলীপ ঘোষ ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে ঠাণ্ডা লড়াই ছিলই। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে মুকুলকে হজম করতে বাধ্য হয়েছেন রাজ্য নেতারা। শেষমেষ তিনি দল ছাড়ায় সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটল। এবার বিজেপি তাঁর পবিরুদ্ধে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয় কি না, একই সঙ্গে তা নিয়ে নতুন করে জল্পনা দানা বাঁধছে।