scorecardresearch
 

হাতির সংখ্যা বাড়ছে উত্তরে, দ্রুত শুমারির দাবি

এ রাজ্যের জঙ্গলে হাতির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। হাতির আনাগোণা বৃদ্ধি ও তাদের গতিবিধি দেখে পরিবেশবিদ ও প্রাণীপ্রেমীরা নিশ্চিত শুমারি হলে সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাবে। ২০২০ সালে নির্ধারিত সময়ে হাতি শুমারি হয়নি। ফলে সেটি দ্রুত করা দরকার।

Advertisement
এখন হাতির সংখ্যা কত, জানতে চায় বন্যপ্রেমীরা এখন হাতির সংখ্যা কত, জানতে চায় বন্যপ্রেমীরা
হাইলাইটস
  • দ্রুত হাতি শুমারির দাবি রাজ্যে
  • জঙ্গলে অনুকূল পরিবেশ রয়েছে রাজ্যে
  • শেষ গণনায় হাতি ছিল প্রায় ৭০০

রাজ্যে হাতির সংখ্যা বেড়েছে

এ রাজ্যের জঙ্গলে হাতির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। হাতির আনাগোণা বৃদ্ধি ও তাদের গতিবিধি দেখে পরিবেশবিদ ও প্রাণীপ্রেমীরা নিশ্চিত শুমারি হলে সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাবে।

শেষ শুমারি হয় ২০১৮ সালে

২০১৮ সালে শেষবার হাতিশুমারি হয়েছে। সেবার একসঙ্গে রাজ্য ও অন্য রাজ্যেও হাতি শুমারি হয়েছিল। সেখানে দেখা যায়, রাজ্যে হাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল । ২০১৬ সালের পর ২০১৮ সালে ‘ডাং ডিকে’ পদ্ধতি অনুসরণ করে হাতি গণনার করা হয়।

শেষ গণনায় ছিল ৭০০ হাতি

২০১৬ সালের সমীক্ষায় উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে এ রাজ্যে হাতির সংখ্যা সাড়ে পাঁচশোর কাছাকাছি ছিল। সেখান থেকে পরের দু বছরে ২০১৮ সালের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হাতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৭০০টি।

সিংহভাগ হাতি উত্তরবঙ্গেই

সমীক্ষাতেই ধরা পড়েছে, দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূমের বিভিন্ন জঙ্গলের থেকে উত্তরবঙ্গের কার্শিয়াং, বক্সা, তরাই, ডুয়ার্স, কালিম্পংয়ের বিভিন্ন জঙ্গলে হাতির সংখ্যা অনেক বেশি। মূলত নেপাল ও অসমের জঙ্গলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকাতেই রাজ্যে হাতি মাঝে মধ্য়েই চলে আসে।

বনবাসীদের সাহায্য নেওয়া হয়

বনবাসীদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল। যার মাধ্যমে কোনও এলাকায় হাতি দেখলেই তার সচিত্র বর্ণনা পাঠানোর সঙ্গে বনকর্মীরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারেন। তাতে অনেক সুবিধা হয়েছিল। তা ছাড়া হাতির বিষ্ঠা দেখলেও তাঁরা বন দফতরে খবর দেন।

কেন বাড়ছে হাতির সংখ্যা

এক প্রাক্তন বনকর্তা অতনু রাহা জানিয়েছিলেন, এ রাজ্যে হাতির থাকার জন্য অনুকুল পরিবেশ ও পর্যাপ্ত খাদ্য রয়েছে। পাশাপাশি হাতিকে উত্তরবঙ্গের মানুষ মহাকালবাবা হিসেবে দেবতার আসন দিয়েছেন। ফলে হাতির উপর মানুষের আক্রমণের ঘটনাও তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। মূলত সেই কারণেই হাতির দল এ রাজ্যকে সেফ হোম হিসেবে বেছে নিচ্ছে।

Advertisement

বন্যপ্রাণপ্রেমীদের বক্তব্য

পরিবেশপ্রেমী অনিমেষ বসু জানান, হাতির সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ উত্তরবঙ্গে প্রচুর অরণ্য এখনও রয়েছে। পাশাপাশি অনেক বড় টেরিটরি তারা পায় নেপাল, অসমের বিশাল জঙ্গলের সঙ্গে কোচবিহার, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির একটা বিস্তীর্ণ জঙ্গল ভিতর দিয়ে যুক্ত। ফলে সাম্রাজ্য বিস্তারে সুবিধা হয়। অন্যদিকে বন্যপ্রাণপ্রেমী দীপজ্যোতি চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ভুট্টা, কলা, ধানখেত জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় বেশি থাকায় হাতি বেড়িয়ে আসছে। আর জঙ্গলবাসীরা জানিয়েছে, হাতির দলে মোট সংখ্য়া বৃদ্ধি হয়েছে। তা পরিষ্কার। এলাকার পরিবেশ ও পর্যটন বিশেষজ্ঞ রাজ বসু জানিয়েছেন, হাতির উপযুক্ত স্যাঁতসেঁতে বনাঞ্চল হওয়ায় এই এলাকায় হাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি হাতি-মানুষের সংঘাত বিগত এক দশকে লাগাতার প্রচার ও সচেতনতার ফলে অনেক কমেছে। এটাও একটা কারণ হাতির সংখ্যা বৃদ্ধির।

১৯৯৭ সাল থেকে হাতি ক্রমশ বেড়েছে

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে প্রথম হাতি গণনা হয়েছিল রাজ্যে। তখন পশ্চিমবঙ্গে হাতির সংখ্যা ছিল মাত্র ২২৭টি। এর মধ্যে মাত্র ৫০টি হাতি ছিল দক্ষিণবঙ্গে। বাকিটা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গলে। তার পর থেকে দু’বছর অন্তর হাতি গণনা করা হয়। গত ২০০০ সালে সংখ্যাটা ছিল প্রায় সাড়ে তিনশোর কাছাকাছি। ২০১৬ সালে তা পৌঁছে যায় প্রায় সাড়ে পাঁচশোতে। ২০২০ তে হাতি গণনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তা বাতিল করতে হয়। ফলে দ্রুত শুমারির দাবি উঠেছে সব মহল থেকেই।

হাতিকে বিজ্ঞাপন করেই পর্যটনে জোয়ার আসতে পারে

হাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে তাকে পর্যটকদের কাছে বিজ্ঞাপন করে তা আকর্ষণীয় করে তোলা হবে। কী ভাবে বাড়ন্ত হাতিকে কাজে লাগিয়ে তা পর্যটনপ্রেমীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, সে ব্যাপারে পর্যটন দফতরের সঙ্গে কথা বলছেন বন দফতরের কর্তারা। 

 

Advertisement