তৃণমূলে প্রবীণ-নবীন বিতর্কে দলের সাংসদ দিব্যন্দু অধিকারীর গলায় শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই সুর। bangla.aajtak.in-এ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই বললেন, 'প্রবীণদেরও যেমন প্রয়োজন, নবীনদেরও তেমন প্রয়োজন।' ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আবার কি তৃণমূলের প্রতীকেই ভোটে লড়বেন? এই নিয়েও মুখ খুললেন তৃণমূলে 'নিষ্ক্রিয়' দিব্যেন্দু।
ঠিক কী বলেছেন দিব্যেন্দু?
গত কয়েক মাস ধরেই তৃণমূলে নবীন বনাম প্রবীণের লড়াই নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের এক কর্মসূচিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি না-থাকা নিয়ে নতুন করে এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। এই দ্বন্দ্বের আবহে স্বয়ং তৃণমূলনেত্রী বলেছিলেন, 'পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। আর নতুনরা আগে বাড়ে। দলের সিনিয়র লিডারদের সম্মান দিতে হবে।' প্রবীণ-নবীন, দু'জনেরই প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন মমতা। এই প্রসঙ্গে bangla.aajtak.in-এ দিব্যেন্দু বলেন, 'বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে নবীন-প্রবীণ থাকতে পারে, যে এই বয়সের পর ভোটে দাঁড়াবেন না। ভারতবর্ষের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ তো এখনও সাংসদ। একটা কথাই বলতে পারি, প্রবীণদেরও যেমন প্রয়োজন, নবীনদেরও প্রয়োজন।'
২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। তার পর থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বেড়েছে। দিব্যেন্দুর বাবা তথা কাঁথির প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূলের বাগযুদ্ধে সরগরম থেকেছে রাজ্য রাজনীতি। সেই সময় বিধানসভা ভোটের প্রচারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাতেও দেখা গিয়েছিল শিশিরকে। শিশির এবং দিব্যেন্দুর সাংসদ পদ বাতিলের জন্য লোকসভার স্পিকারের কাছে আবেদন করেছে তৃণমূলের সংসদীয় দল। এই আবহে দলে প্রবীণ-নবীন বিতর্কে মুখ খুলে কার্যত মমতার সুরই শোনা গেল দিব্যেন্দুর গলায়। বললেন, প্রবীণ এবং নবীন, এই দুইয়েরই প্রয়োজনীয়তার কথা। এই বিতর্ক প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, 'যাঁরা বলছেন, যাঁদের উদ্দেশ্য করে বলছেন, তিনি বা তাঁরাই ভাল ব্যখ্যা দিতে পারবেন। যাঁরা বিতর্কের মধ্যে রয়েছেন, তাঁদেরকেই উত্তর দিতে হবে।'
তমলুক থেকে জোড়াফুল প্রতীকে লড়েছিলেন দিব্যেন্দু। ২০২১ সালের পর রাজনৈতিক পটভূমিতে বদল এসেছে। ক'মাসের মধ্যেই লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। আবার কি ভোটে লড়বেন দিব্যেন্দু? এই প্রসঙ্গে সাংসদ বলেন, 'দাঁড়াচ্ছি না, দাঁড়াচ্ছি আমি কী করে বলব। মানুষ চাইলে দাঁড়াব। ৫ বছর ধরেই মানুষের কাজ করছি। যাঁরা মানুষের কাজ করেন, তাঁদের নতুন করে ভোটের প্রস্তুতি নিতে হয় না।' ভোটে লড়লে কোন প্রতীকে লড়বেন? এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়েছেন দিব্যেন্দু। বলেছেন, 'লোকসভা এখনও শেষ হয়নি। ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়নি। এখনও দেরি রয়েছে।' শুভেন্দু-প্রসঙ্গ শুনেই কথা বলতে চাননি তিনি। ঘটনাচক্রে সোমবার রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করেছেন শিশির এবং দিব্যেন্দু। 'সৌজন্য সাক্ষাৎ' বলে মন্তব্য করেছেন দিব্যেন্দু। রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা হয়নি বলেই জানিয়েছেন তিনি। তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যপালের সঙ্গে শিশির-দিব্যেন্দুর সাক্ষাৎ আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'ওঁরা দু'জনেই বিজেপি হয়ে গিয়েছেন। তাই যাঁরা বিজেপির দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের আশীর্বাদ নিতে গিয়েছেন।'