মঙ্গলবারই আশার আলো দেখা গিয়েছিল করোনা বিশ্বে। ব্রিটেনে শুরু হয়েছিল করোনার গণ টিকাকরণ। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই তাল কাটল। জানা গেল, যাঁদের অ্যালার্জির ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের ফাইজারের (Pfizer) করোনা প্রতিষেধক না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্যকর্তারা।
যাঁরা ব্রিটেনে ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দুই এনএইচএস কর্মীর প্রবল অ্যালার্জি হয়েছে। জানা গিয়েছে, তাঁরা এমনিতেই অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগতেন।
অ্যালার্জির ধাত থাকলে কোনওভাবেই ফাইজারের টিকা নেওয়া যাবে না। খাবার, ওষুধ বা যে কোনও কিছুতেই যদি অ্যালার্জি থাকে তাহলে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা নেওয়া যাবে না। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
অ্যালার্জিপ্রবণ মানুষদের টিকা নিতে নিষেধ করল ব্রিটেনের ওষুধ ও টিকা নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমএইচআরএ। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘‘যাঁদের কোনও ধরনের খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ বা টিকায় অ্যালার্জি রয়েছে, তাঁদের এই ভ্যাকসিন নিতে আপাতত নিষেধ করা হচ্ছে।’’
ব্রিটেনে প্রথম দফায় টিকা দেওয়া হচ্ছে, স্বাস্থ্যকর্মী, হাসপাতালে ভর্তি রোগী এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের।
এমএইচআরএ-র এই নির্দেশিকা জারির পরে ফাইজ়ার বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘‘যাঁরা টিকা পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দু’জনের অ্যালার্জির মতো প্রতিক্রিয়া হয়েছে। কেন তা হয়েছে, তা জানতে এমএইচআরএ-র তদন্তে আমরা সব রকম সাহায্য করব। তবে আমরা ৪২ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে দু’টি করে পরীক্ষামূলক ডোজ় দিয়েছিলাম। তাঁদের কারওরই কোনও বিপজ্জনক প্রতিক্রিয়া হয়নি।’’
গত সপ্তাহেই ব্রিটেনে গণ টিকাকরণের ছাড়পত্র পায় ফাইজার ও বায়োএনটেকের সম্ভাব্য কোভিড প্রতিষেধক। বরিস জনসনের সরকার জানিয়েছিল, “স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি অর্গানাইজেশন এই সম্ভাব্য প্রতিষেধক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।”
তবে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অ্যালার্জিপ্রবণ দুই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন তাঁরা। তাঁদের সুস্থতার হারও স্বস্তিজনক। যদিও আপাতত সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে অ্যালার্জির ইতিহাস আছে, এমন মানুষকে এই প্রতিষেধক দেওয়া যাবে না।
ফাইজারের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁদের অতিরিক্ত অ্যালার্জির প্রবণতা রয়েছে, শেষ ট্রায়ালে তাঁদেরকে তালিকা থেকে বাদই রাখা হয়েছিল। ফলে আপাতত এই রোগের অতীত খোঁজখবর নেওয়ার পরই ব্রিটেনবাসীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
অ্যানাফিল্যাক্সিস কি? স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যানাফিল্যাক্সিস হল জটিল অ্যালার্জির রোগ। বলা হয় 'সিভিয়ার অ্যানার্জিক রিঅ্যাকশন'। খাবার, ওষুধপত্র বা বিষক্রিয়ায়এই রোগ হতে পারে। ডিম, দুধ বা বাদাম জাতীয় খাবারেও অনেকের এই রকম অ্যালার্জি হতে দেখা যায়। সাধারণ অ্যালার্জির থেকে অনেকবেশিই যন্ত্রণাদায়ক অ্যালাফিল্যাক্সিস। সারা শরীরে র্যাশ হয়ে যায়, বমিভাব, মাথাব্যথা দেখা দেয়। রক্তচাপ আচমকা কমে যেতে পারে, পালস রেট কমে যায়। অ্যালার্জি তীব্র ভাবে ছড়িয়ে পড়ে মৃত্যুও হতে পারে।
ভ্য়াকসিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফাইজারের টিকায় পলিইথিলিন গ্লাইকল নামে এমন এক উদাপান আছে যার কারণে এই অ্যালার্জির রিঅ্যাকশন হতে পারে। এই পলিইথিলিন গ্লাইকল টিকার কার্যকারিতা বাড়ায়। তবে শরীরে অ্যালার্জির ধাত থাকলে ভ্যাকসিনের ডোজে প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই সতর্কতা। ডিমে অ্যালার্জি থাকা ব্যক্তিদের ভ্যাকসিনটি ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ এই ভ্যাকসিন তৈরিতে মুরগির ডিমও ব্যবহৃত হয়েছে।
ভ্য়াকসিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফাইজারের টিকায় পলিইথিলিন গ্লাইকল নামে এমন এক উদাপান আছে যার কারণে এই অ্যালার্জির রিঅ্যাকশন হতে পারে। এই পলিইথিলিন গ্লাইকল টিকার কার্যকারিতা বাড়ায়। তবে শরীরে অ্যালার্জির ধাত থাকলে ভ্যাকসিনের ডোজে প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই সতর্কতা। ডিমে অ্যালার্জি থাকা ব্যক্তিদের ভ্যাকসিনটি ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ এই ভ্যাকসিন তৈরিতে মুরগির ডিমও ব্যবহৃত হয়েছে।
ফাইজারের ভ্যাকসিন গ্রহণের পরে অ্যালার্জির সাধারণ লক্ষণগুলি হ'ল দেহে দৃশ্যমান ফুসকুড়ি, ত্বকের জ্বালা, কাশি বা শ্বাসকষ্টে অসুবিধা। এই টিকা দেওয়ার পরে সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি হল হাতে ব্যথার লক্ষণ (যেখানে ইনজেকশন দেওয়া হয়), জ্বর বা পেশীর ব্যথা হতে পারে। ফাইজারের সমীক্ষায় দেখা গেছে যে এই ভ্যাকসিনটিতে যাঁরা নিয়েছেন তাঁদের ক্লান্তি, মাথা ব্যথা বা ঠাণ্ডালাগার মতো সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তবে এই টিকা দেওয়ার পরে অ্যালার্জির ক্ষেত্রে খুব কম এবং স্বল্প মেয়াদী ক্ষেত্রে আক্রান্ত হয়। তাও অর্থ খুব অল্প সময়ের জন্য।