অনলাইন বিপণনে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান আলিবাবা। চিনের ই-কমার্স জায়ান্ট এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান জ্যাক মা এখন কোথায় আছেন তা কেউ জানে না। এমনকি নিজের উদ্ভাবিত ট্যালেন্ট শো'তেও নেই তার উপস্থিতি।
সম্প্রতি চিনের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সমালোচনা করেন তিনি। তারপর থেকেই নিখোঁজ জ্যাক। আলিবাবা’র প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা কোথায়! এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে চারদিকে।
গত বছরের অক্টোবরে চিনের আর্থিক খাত নিয়ামক সংস্থার সমালোচনা করেন জ্যাক মা। তারপর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাকে জনসম্মুখে দেখা যাচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্রের “দ্য এপ্রেনটিস” টিভি শো’র আদলেই জ্যাক মা চালু করেন “আফ্রিকা’স বিজনেস হিরোজ” নামক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। সেখানে তরুণ আফ্রিকান উদ্যোক্তাদের মধ্যে ব্যবসায়ীক উদ্ভাবনী ক্ষমতা নিয়ে প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়। আর বিজয়ী পান ১৫ লাখ মার্কিন ডলারের আকর্ষণীয় আর্থিক পুরস্কার। শো’র চূড়ান্ত রাউন্ডেও উপস্থিত ছিলেন না মা, ফলে তিনি গৃহবন্দী- কিনা তা নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নিজের শো কখনোই মিস করেন না মা। বিচারক প্যানেলের সদস্য হিসেবে তিনি উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক আইডিয়াগুলো পর্যালোচনা করে রায় ঘোষণা করেন। কিন্তু, এবার নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ফাইনালে তার জায়গায় বিচারক মণ্ডলীতে ছিলেন আলীবাবার একজন নির্বাহী।
বিখ্যাত ব্রিটিশ দৈনিক ফিনান্সিয়াল টাইমস জানায়, বিচারক প্যানেলের ওয়েবপেজ থেকেও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে চিনা এই ধনকুবেরের ছবি। এমনকি শো’র প্রমোশনমূলক ভিডিওতেও তার অংশটুকু কেটে বাদ দেওয়া হয়।
দৈনিকটি আলীবাবা’র একজন মুখপাত্রের মন্তব্য তুলে ধরে। তিনি জানান, ‘ওই সময়ে ব্যস্ত থাকার কারণে মা বিচারক প্যানেলে উপস্থিত থাকতে পারেননি।’ তবে এই বিবৃতিকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করা হচ্ছে না।
এককালে চিনের সবচেয়ে সফল এই উদ্যোক্তা ছিলেন রাজনীতিবিদদের প্রিয়ভাজন। কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে তিনি সেই সুনজর হারিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে নীতি নিয়ে সমালোচনা করার পর থেকেই একের পর এক আক্রমণের মুখে পড়েছে আলীবাবা এবং মা’র আরেক প্রতিষ্ঠান অ্যান্ট গ্রুপ।
ইতিমধ্যে অ্যান্ট গ্রুপের ৩৭ বিলিয়ন ডলারের আইপিও স্থগিত করেছে সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ। তারপর থেকেই জ্যাক মা’কে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।
গত দু’মাস ধরে জনসমক্ষে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে কি জিনপিং সরকারের দ্বারা গৃহবন্দি তিনি? সন্দেহ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।