দক্ষিণ চিন সাগরে ক্রমেই নিজের আধিপত্য বাড়াচ্ছে চিন। আর এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধেই এবার একজোট হল আমেরিকা, জাপান,ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া। চিনের দর্প খর্ব করতে এবার যৌথ সেনা মহড়ায় নামতে চলেছে কোয়াড দেশগুলি।
লাদাখ সীমান্ত নিয়ে চিনের সঙ্গে এখনও চাপা উত্তেজনা বর্তমান ভারতের। এর মধ্যে চলতি বছরের নভেম্বরে মালাবার নৌ মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরে হতে চলা এই নৌ মহড়ায় কসরত করতে দেখা যাবে ভারত সহ ৪টি দেশকে।
প্রতি বছর ভারতের সঙ্গে এই নৌ মহড়ায় থাকে আমেরিকা এবং জাপানের নৌ বাহিনী। এবার বাড়তি পাওনা হিসাবে তাতে যোগ দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়াও।
ইতিমধ্যে সেই আমন্ত্রন গ্রহণ করেছে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রেনল্ডস বলেছেন, "এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে ও ইন্দো-প্যাসিফিকে চার প্রধান গণতন্ত্রের মধ্যে যে একে অপরের প্রতি গভীর আস্থা আছে, তারই নিদর্শন এই নৌ সেনাদের কসরত।"
দুই সপ্তাহ আগেই কোয়াড দেশের বিদেশমন্ত্রকদের মধ্যে টোকিওতে বৈঠক হয়। সেখানে আলোচনা হয় কিভাবে ইন্দো-প্যাসিফিকে চিনের আগ্রাসনকে রোখা যায়। তারপরেই গত সোমবার ভারতের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে মালাবার নৌ মহড়া যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। ফলে এবার একই সঙ্গে ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার নৌসেনাকে অনুশীলন করতে দেখা যাবে ।
১৯৯২ সালে ভারতীয় মহাসাগরে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে ড্রিল হিসেবে শুরু হয় মালাবার। এরপর জাপান যুক্ত হয় ২০১৫ থেকে। গত কয়েক বছর ধরেই এই নৌ বাহিনীর যুদ্ধ প্রশিক্ষণে যুক্ত হতে ইচ্ছাপ্রকাশ করছিল অস্ট্রেলিয়া। অবশেষে তারাও যুক্ত হচ্ছে মালাবার নৌ মহড়ায়।
এর আগে ২০০৭ সালে এই মহড়ায় অস্ট্রেলিয়া অংশ নিয়েছিল। সে বছর অংশ নেয় সিঙ্গাপুরও। কিন্তু তাতে ক্ষুব্ধ হয় চিন। বেজিংয়ের ক্ষোভকে মর্যাদা দিতেই ভারত এই মহড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে অংশ নিতে দিত না। কিন্তু লাদাখের ঘটনা পুরো ছবিটাই বদলে দিয়েছে।
চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের ফলে অস্ট্রেলিয়াকে নৌ-মহড়ায় অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে দিল্লি আসলে বেইজিংকেই কড়া বার্তা দিলো বলে মনে করছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা।
এই পরিস্থিতিতে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চিন। জানা যাচ্ছে দক্ষিণ চিন সাগরের বিতর্কিত অঞ্চলে নতুন একটি শহর গড়ার তোড়জোড় করছে বেজিং প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নির্দেশই এই শহর নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ চিন সাগরের ইয়াংজিং দ্বীপের সঙ্গে ঝাওশু ও জিনকিং দ্বীপকেও যুক্ত করে নতুন এক বৃহৎ শহর নির্মানের পরিকল্পনা রয়েছে চিনের।