কে হবে বিশ্বের সুপার পাওয়ার, কার থাকবে বিশ্ব নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা, কে শাসন করবে বিশ্ব অর্থনীতি এই নিয়ে মহাশক্তিধর দুই রাষ্ট্র চিন ও আমেরিকার দ্বন্দ্ব সুপ্রাচীন। আন্তর্জাতিক রাজনীতি হোক বা অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কায়েমের চেষ্টা বা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কেউ কাউকে এক চুলও ছেড়ে কথা বলে না এই দুই মহা শক্তিধর রাষ্ট্র।
আমেরিকার অভিযোগ চিনের উহান প্রদেশেই এই ভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে। এর পিছনে চিনের কোনও গোপন লক্ষ্য ছিল, উল্টে তারাই ফেঁসে গিয়েছে। উহান থেকে এই ভাইরাস কীভাবে গোটা বিশ্বে ছড়াল তা নিতেও প্রশ্ন তুলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। আমেরিকার তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে শি জিনপিং সরকারের দায়িত্বহীনতার জন্যই উহানে ব্যাপক হারে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
অন্যদিকে চিনের দাবি, আমেরিকাই এই ভাইরাসের জন্মদাতা। এবং এই মহামারির জন্য তারাই দায়ি। চিনের সরকারি মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসে এই নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
চিনা পত্রিকা বলেছে যে মার্কিন সরকার এমন ভয়াবহ অপরাধ করছে যে ক্ষমা করা যায় না। বিশ্বে এখনও পর্যন্ত আমেরিকাতেই সবচেয়ে বেশি করোনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আমেরিকাতে ২ লক্ষ ৮৮ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে কোভিড ১৯।
উৎসবের মরসুমে সংক্রমণ-ঢেউ আরও বেড়েছে আমেরিকায়। ডিসেম্বরের শুরুতেই আমেরিকায় দৈনিক সংক্রমণ গড়ে দেড় লক্ষ। দিনে মৃত্যু গড়ে ১৪০০। শীতে সংক্রমণ আরও বাড়বে, তাহলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, সেই আশঙ্কায় বিশেষজ্ঞেরা।
এরমধ্যে রববিবারই আমেরিকায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে, যা নয়া রেকর্ড। গ্লোবাল টাইমস এই পরিস্থিতিতে নিশানা করেই লিখেছে আমেরিকায় গণহত্যা চলছে। যা একবিংশ শতাব্দীতে মানবতার জন্য লজ্জাজনক।
এরমধ্যে রববিবারই আমেরিকায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২,৩০ হাজার ছাড়িয়েছে, যা নয়া রেকর্ড। গ্লোবাল টাইমস এই পরিস্থিতিতে নিশানা করেই লিখেছে আমেরিকায় গণহত্যা চলছে। যা একবিংশ শতাব্দীতে মানবতার জন্য লজ্জাজনক।
যুক্তরাষ্ট্র প্রায়শই অন্যান্য দেশগুলিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে। সেই নিয়ে গ্লোবাল টাইমস বলছে, সময় এসেছে যে আন্তর্জাতিক মঞ্চকে সাহসের সাথে আমেরিকার বর্তমান সরকারের কাছে প্রশ্ন করা। সুপার পাওয়ারকে এখন সরাসরি জবাব দিতে হবে - ' কেন নিজেদের লোকদের হত্যা করছেন? মানবতার শেষ লাইনটিও অতিক্রম করেছ। তুমি মানবতার শত্রু।'
গ্লোবাল টাইমস বলেছে যে অন্যান্য দেশগুলি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আমেরিকা যেন তার লোকদের ব্যাপারে যত্নবান হয়।
এদিকে হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময় প্রায় চলে এসেছে মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। কিন্তু যেতে যেতেও চিনকে বড় ঝটকা দিয়ে গেলেন ট্রাম্প। করোনা ভাইরাস প্রসঙ্গে প্রথম থেকেই আর সকল দেশের মতই চিনকে দোষারোপ করে এসেছে আমেরিকা।
মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপে সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে আমেরিকায়। প্রাণ হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। একটা সময় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল সুপার পাওয়ার আমেরিকা। সেই কারণে প্রথম থেকেই চিন প্রধান জিনপিংকে এই মহামারি রোগের জন্য দায়ি করে এসেছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রধান ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বহুবার প্রকাশ্যে চিনকে হুমকি দেওয়ার পর এবার এক জোর ঝটকা দিলেন মার্কিন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি মার্কিন নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন জো বিডেন। এবার থেকে আর ডোনাল্ড ট্রাম্প নয়, মার্কিন সম্রাটের সিংহাসনে বসবেন জো বিডেন। হোয়াইট হাউসও থাকবে তাঁরই দখলে। এবার ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়ার সময় হয়েছে ট্রাম্পের।
ক্ষমতা ছেড়ে যেতে যেতেও চিনকে চাপে রাখতে এক বড় পদক্ষেপ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প চিনের বৃহত্তম প্রসেসর চিপ প্রস্তুতকারক এসএমআইসি এবং তেল জায়ান্ট CNOOC সহ চারটি চীিনা সংস্থাকে ব্ল্যাক লিস্ট করলেন। কারণ হিসাবে দেখালেন, এই সকল চিনা কোম্পানির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত রয়েছে চাইনিজ সেনারা। সেই কারণেই এই সকল কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা থেকে সরে গেলেও, চিনের প্রতি যে তাঁর নজর সরেনি, যেতে যেতেও সেকথা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।