ঝড়, বন্যা, বৃষ্টি, খরার পর এবার তুষারশৃঙ্গে বৃষ্টিও হল। গ্রিনল্যান্ডে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। যার জেরে চিন্তা বেড়েছে জলবায়ু বিজ্ঞানীদের। প্রায় ৭ কোটি টন বৃষ্টি হয়েছে। এতে তুষারশৃঙ্গের বরফের স্তর নষ্ট হয়েছে। এই তথ্য সামনে এনেছে ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন সামিট স্টেশন।
ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন সামিট স্টেশন-এর দেওয়া তথ্য অনুসারে, এর আগেও এখানে বৃষ্টি হয়েছে। তবে গ্রিনল্যান্ডের সর্বোচ্চ শিখরে বৃষ্টি এই প্রথম। যা বেশ উদ্বেগের। ১৯৯৫, ২০০১ ও ২০১৯ সালেও বৃষ্টি হয়েছে গ্রিনল্যান্ডের সর্বোচ্চ শিখরের আশপাশে। এর ফলে বরফের চাদর ভেঙে যায় ও তাপমাত্রা শূন্যর নিচে চলে আসে।
NSIDC-র দেওয়া তথ্য অনুসারে, ১৪ থেকে ১৬ অগাস্ট ২.১৩ কোটি বর্গ কিমি এলাকাতে বরফ গলেছে। যা এক বিরল ঘটনা।
NSIDC-র তরফে আরও জানানো হয়েছে, ১০ হাজার ৫৫১ ফুট উপরে বৃষ্টির ঘটনা বিরল। এই ৩ দিনে এত বৃষ্টি হয়েছে যে, আমেরিকা ও গ্রিনল্যান্ডে এক বছরে এত বরফ গলে না।
বিজ্ঞানীদের মতে, বায়ু দূষণ মাত্রাতিরিক্ত হওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে। গত এক বা দুই দশকে জলবায়ু এত পরিবর্তিত হয়েছে যে, কোন দেশে এর কী প্রভাব পড়তে পারে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। গবেষকদের মতে, গ্রিনল্যান্ডের জলস্তর বেড়েছে প্রায় ২০ সেমি। যা ওই এলাকার জন্য মারাত্মক প্রমাণিত হতে পারে।
ওই বিজ্ঞানীরা আরও বলেছেন, ওই ৩ দিন তাপমাত্রা প্রায় টানা ৯ ঘণ্টা হিমাঙ্কের উপরে ছিল। এই কেন্দ্রে ১৯৮৯ সাল থেকে আমেরিকার ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের কর্মীরা সারা বছর অবস্থান করেন। তাঁরা জানিয়েছেন, গত এক দশকেরও কম সময়ে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো গ্রীনল্যান্ডের চূড়ায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের উপরে উঠে গেল।
ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোর ন্যাশনাল আইস অ্যান্ড স্নো সেন্টারের বিজ্ঞানী টেড স্ক্যাম্বোস জানান, গ্রিনল্যান্ডে বৃষ্টিপাত শুধু যে এক বা দুই দশকের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলাফল, তা নয়। এমন ঘটনা শত বছরেও বিরল। বায়ুমণ্ডলে দূষণ এখনই বন্ধ না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রিনল্যান্ডের বরফ এখন আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে। বিশ্বের তাপমাত্রা যদি বাড়তেই থাকে, এই বরফ গলে পুরোপুরি জল হতে বেশি সময় লাগবে না। তাতে ক্ষতি বাড়বে গোটা বিশ্বের।