তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে মর্কিন সেনেটের দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। কিন্তু শনিবার ভোটাভুটিতে ৫৭ জন সেনেটর ট্রাম্প ‘দোষী’ বলে মত দিলেও বিপক্ষে পড়ে ৪৩ ভোট।
অবশ্য দলীয় প্রতিনিধির সংখ্যায় আধাআধি ভারসাম্যে থাকা সেনেটে ডেমোক্র্যাটদের আনা ওই অভিযোগে এবারও যে ট্রাম্প রেহাই পেয়ে যাবেন, তা আগেই ধারণা করা হচ্ছিল।
মার্কিন আইনসভা ক্যাপিটল হিল ভবনে সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহে প্ররোচনা ও উস্কানি দেয়ার অভিযোগে সেনেটে ট্রাম্পের দ্বিতীয় ইমপিচমেন্টের বিচার অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিপক্ষ রিপাবলিকান সিনেটরদের প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় এই বিচারে ট্রাম্পকে দন্ডিত করা যায়নি। তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রিপাবলিকান পার্টির সাতজন ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু ট্রাম্পকে ইমপিচ করতে আরও অন্তত ১৭ জন রিপাবলিকানের সমর্থন প্রয়োজন ছিল।
সেনেটের ইমপিচমেন্ট বিচার মূলত একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, ফৌজদারি বিচার নয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ কোনো প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করলে তাকে ওই পদ থেকে অপসারণের জন্য সেনেটেই বিচারের আয়োজন করা হয়।
ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ ছিল, মার্কিন ক্যাপিটলে হামলা চালানোর জন্য সমর্থকদের উসকে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। হিংসায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে তাকে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হতে হয়।
যদিও শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের আইনজীবীর দাবি, এই প্রক্রিয়া ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটদের ‘রাজনৈতিক নাটক’।
গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত ট্রাম্প ইতোমধ্যে তার মেয়াদ শেষে বিদায় নিয়েছেন। গত ২০ জানুয়ারি শপথ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন। সে কারণে সেনেটের ভোটে ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলেও তার অপসারণের কোনো বিষয় এবার ছিল না। তবে ডেমোক্র্যাটরা আশা করেছিলেন,ইমপিচমেন্টের বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্পের আবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ বন্ধ করার সুযোগ মিলবে।
তবে সেই চেষ্টায় তারা সফল হতে পারেননি। সেনেটের বিচারে রেহাই পাওয়া ট্রাম্প ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও একজন বৈধ প্রার্থী বিবেচিত হবেন, যদি তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। সেনেটের ভোটাভুটি শেষ হওয়ার পরপরই এক বিবৃতিতে ৭৪ বছর বয়সী ট্রাম্প বলেছেন, তার সফর চলবে।
ক্যাপিটলে হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি ট্রাম্পকে অভিশংসিত করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ট্রাম্পই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি দুই বার প্রতিনিধি পরিষদে ইমপিচ হয়েছেন। আর ক্ষমতা ছাড়ার পর কেবল তাকে নিয়েই সেনেটে ইমপিচমেন্ট ট্রায়ালের আয়োজন হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ২০১৯ সালে একবার সেনেটে ইমপিচমেন্টের মুখে পড়েন ট্রাম্প। তবে সেবারও সেনেটে ভোটাভুটিতে তার পদ রক্ষা হয়। ট্রাম্পের আগে আরও দুজন প্রেসিডেন্ট ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তবে সেনেট কাউকে কখনও অপসারণ করেনি।