ফের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মুখোমুখি পাকিস্তান। এবার ইরান চালাল এই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। বালোচ জঙ্গিদের ডেরা থেকে অপহৃত দুই সেনাকর্মীকে উদ্ধার করল ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডস (IRGC) বাহিনী।
ভারতের পর এই প্রথম অন্য কোনও দেশ পাকিস্তানে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালালো। সেক্ষেত্রে ভারতই পথ প্রদর্শক বলা চলে।
পর পর দুবার পাকিস্তানে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারত। একবার উরি হামলার পর আর দ্বিতীয়বার কাশ্মীরে সিআরপিএফের গাড়িতে হামলার পর। দ্বিতীয়টি ছিল এয়ার স্ট্রাইক।
ইরান রিভলিউশনারি গার্ডের কিছু সেনা পাকিস্তানে গোপন অভিযানে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা বালোচ জঙ্গিদের হাতে অপহৃত হন। খবর পাওয়া মাত্রা প্রস্তুত হতে শুরু করে ইরান। একেবারে ভারতের কৌশলেই পাকিস্তানে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালায় তারা। বালোচ জঙ্গিদের ডেরায় হানা দিয়ে দুই সেনাকে ছিনিয়ে নিয়ে আসে ইরানের বাহিনী।
দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডসের গ্রাউন্ড ফোর্সের কুদস বেস জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে সফল গোপনীয় অভিযানে দুই ইরানি সীমান্তরক্ষীকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গত মঙ্গলবার রাতে সফল অভিযানে আড়াই বছর আগে জইশ-উদ-আদল সংগঠনের হাতে অপহৃত দুই সীমান্ত রক্ষীকে উদ্ধার করা হয়েছে।’
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে পাকিস্তানের উগ্রপন্থী ওয়াহাবি জঙ্গি সংগঠন জইশ-উদ-আদল ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকা থেকে ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডসের ১২ জন রক্ষীকে অপহরণ করে বালোচিস্তান প্রদেশের সিসতান অঞ্চলের মেরকাভা শহরে নিয়ে যায়। অপহৃত সীমান্তরক্ষীদের উদ্ধার করতে যৌথ কমিটি গঠন করে তেহরান ও ইসলামাবাদ। ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর অপহৃত ৫ আইআরজিসি রক্ষীকে মুক্তি দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ২১ মার্চ আরও চার অপহৃত ইরানি সেনাকে উদ্ধার করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। আড়াই বছর ধরে চেষ্টার পর শেষে বাকি ২ রক্ষীকে উদ্ধার করতে সার্জিকাল স্ট্রাইকের পথই বেছে নিল ইরান।
ইরানে বালোচ সুন্নিপন্থীদের অধিকার রক্ষায় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষিত জইশ-উদ-আদল ইরান সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে যুক্ত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সীমান্ত অতিক্রমকরে ইরানে প্রায়ই আঘাত হানে জইশ জঙ্গিরা। ২০১৯ সালে ইরানের বসিজ সংসদীয় ঘাঁটিতে সামরিক বাসের উপরে সন্ত্রাসবাদী হামলায় প্রাণ হারান বেশ কয়েকজন ইরানি সেনা। এর আগে ২০১৪ সালে ইরান সীমান্তের জাকিগৌর অঞ্চল থেকে পাঁচ আইআরজিসি সদস্যকে অপহরণ করেছিল জইশ-উদ-আদল।দুই মাস পরে তাঁদের মধ্যে চারজনকে মুক্তি দিলেও পঞ্চম অপহৃতকে তারা হত্যা করে। দক্ষিণ-পূর্ব ইরানে সক্রিয় এই সন্ত্রাসী সংগঠন ইরানে অনেক বেসামরিক ও সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়েছে অতীতে। এই জঙ্গি সংগঠনটি বালুচিস্তানে গণহত্যাও করেছে।