নেপালে শুক্রবারও থমথমে পরিস্থিতি। টানা কয়েকদিনের হিংসাত্মক বিক্ষোভে এখনও পর্যন্ত ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত শতাধিক। নিহতদের মধ্যে এক ভারতীয় মহিলা এবং তিন জন পুলিশকর্মীও রয়েছেন বলে জানিয়েছে নেপাল পুলিশ।
ভেঙে পড়েছে কেপি শর্মা ওলির সরকার। রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সেই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সূত্রের খবর, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
তবে সমস্যা অন্য জায়গায়। প্রতিবাদ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া গোষ্ঠীর মধ্যেই বিভাজন তৈরি হয়েছে। আন্দোলনকারীদের একাংশ প্রাক্তন নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির প্রধান কুলমান ঘিসিংকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর পদে বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত কেন্দ্র করে। কিন্তু ধীরে ধীরে তা দুর্নীতিবিরোধী প্রতিবাদে রূপ নেয়। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন ওলি।
ক্ষোভ এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে মন্ত্রীর বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি নেপালের সংসদ ভবনও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
সূত্রের দাবি, সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করার বিষয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা চলছে। সেনা এবং জেনারেশন জেড নেতৃত্বের একটি প্রতিনিধি দলের মধ্যে রাতভর বৈঠকেও তিনি উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত মেলেনি। একাংশ কুলমান ঘিসিংয়ের নাম প্রস্তাব করায় মতবিরোধ তৈরি হয়। একাংশের দাবি, নেপালের ভয়াবহ বিদ্যুৎ সঙ্কট মেটানোর কৃতিত্ব ঘিসিংয়েরই।
আজ, অর্থাৎ শুক্রবার, সেনা এবং জেনারেশন জেড নেতৃত্বের মধ্যে ফের বৈঠক হবে। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন এবং সংসদ ভেঙে দেওয়া নিয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, অশান্ত নেপাল থেকে ভারতীয় নাগরিকদের সরিয়ে আনতে শুরু করেছে ভারত সরকার। বিশেষ বিমানে তাঁদের দেশে ফেরানো হচ্ছে।
শুক্রবারই অন্ধ্রপ্রদেশের অন্তত ১৪০ জনকে কাঠমান্ডু থেকে নিরাপদে দেশে ফেরানো হয়েছে। আরও কয়েকজনকে স্থলপথে ফিরিয়ে আনা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের সোনৌলি সীমান্ত দিয়ে।