ব্রিটেনে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ফাইজার এবং বায়োএনটেকের করোনা টিকা প্রদানের প্রক্রিয়া। এর এদিনই মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে অক্সফোর্ডের সম্ভাব্য টিকার চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্নিনিকাল ট্রায়ালের ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্নিনিকাল ট্রায়ালে গড়ে ৭০% কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিনের । কিন্তু অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রোজেনেকার সম্ভাব্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন নিয়ে একাধিক প্রশ্নচিহ্ন থেকে যাচ্ছে। বিশেষত ৫৫ বছরের উর্ধ্বে মানুষদের ক্ষেত্রে এই টিকা কতটা কার্যকরী হবে , তা নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্রিটেন, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অক্সফোর্টর টিকার ট্রায়ালের আংশিক ফলাফল সামনে আনা হয়েছে। ২৩,৭৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবকের সুরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য এবং ১১,৬৩৬ স্বেচ্ছাসেবীর তথ্য মূল্যায়ন করা হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই ফলাফল থেকে পূর্ণাঙ্গ ছবি মেলা সম্ভব নয়। কারণ একটি পুরো ডোজের পর কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবককে ভুলবশত অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়েছিল।
অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রোজেনেকার বিশেষজ্ঞদের অবশ্য দাবি, দুটি পুরো ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে ৬২ শতাংশ কার্যকরী হয়েছে তাদের টিকা। যে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাথমিকভাবে অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ সাফল্য মিলেছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দ্বিতীয় দলে মাত্র ২,৭৪১ জন ছিলেন। তা থেকে সম্ভাব্য ফলাফল বিবেচনা করা সম্ভব নয়। তাই আরও পরীক্ষার প্রয়োজন আছে।
ফলে অক্সফোর্ডের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে যাচ্ছে। বিশেষত যেখানে ফাইজার, মর্ডানার টিকার কার্যকারিতা বেশি এসেছে।
অবে অক্সফোজ্ঞডের ভ্যাকসিনটির উৎপাদনে খরচ কম এবং অল্প ব্যয়ে বিপুল সংখ্যক ডোজ উৎপাদন করা যাবে। ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের মতো এটিতে অতিরিক্ত শীতল তাপমাত্রায় রাখতে হবে না।
ভারতে মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যেই থাকবে করোনা সম্ভাব্য প্রতিষেধকের দাম। সেক্ষেত্রে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রোজেনেকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি করা এদেশে করোনার ভ্যাকসিন সেরামের কোভিশিল্ডের প্রতি ডোজের দাম হতে পারে ২৫০ টাকা। আগে বলা হয়েছিল, কোভিশিল্ডের প্রতি ডোজের দাম পড়তে পারে এক হাজার টাকা।
সূত্রের দাবি, ২৫০ টাকা প্রতি ডোজ দরে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে করোনা টিকা বিক্রি করবে আদর পুনাওয়ালার সেরাম ইনস্টিটিউট।
এদিকে কোভিড-১৯ বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও একধাপ এগোল ব্রিটেন। মঙ্গলবারই সেখানে শুরু হল গণ টিকাকারণ। সেই প্রক্রিয়ায় ফাইজারের প্রতিষেধক প্রথম গ্রহণ করলেন এক নবতিপর বৃদ্ধা। ব্রিটেনের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ তিনি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন।
এদিকে কোভিড-১৯ বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও একধাপ এগোল ব্রিটেন। মঙ্গলবারই সেখানে শুরু হল গণ টিকাকারণ। সেই প্রক্রিয়ায় ফাইজারের প্রতিষেধক প্রথম গ্রহণ করলেন এক নবতিপর বৃদ্ধা। ব্রিটেনের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ তিনি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন।
গত সপ্তাহে ব্রিটেনে গণ টিকাকরণের ছাড়পত্র পেয়েছে ফাইজার-বায়োএনটেকের সম্ভাব্য কোভিড প্রতিষেধক। বরিস জনসনের সরকার জানিয়েছিল, স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি অর্গানাইজেশন এই সম্ভাব্য প্রতিষেধক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।
এবার ফাইজারের ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য এই প্রথম কোনও দেশ প্রকাশ করলো। যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) নিশ্চিত করেছে ফাইজার-বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনটি ৯৫ শতাংশ কার্যকর। এর মধ্যদিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিনটির অনুমোদন পাওয়ার পথ সহজ হলো।এফডিএ প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, ভ্যাকসিনটির অনুমোদন না দেওয়ার মতো কোনও নিরাপত্তা উদ্বেগ নেই।
বৃহস্পতিবার ভ্যাকসিনটির অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসবে এফডিএ।এফডিএ প্রকাশিত বিস্তারিত তথ্যে দেখা গেছে, ভ্যাকসিনটি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ৯৫ শতাংশ কার্যকর।
করোনা থেকে পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা পেতে ভ্যাকসিনটির দুটি ডোজ গ্রহণ করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত হলে শরীরে যে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠে, ভ্যাকসিন গ্রহণে তেমন সক্ষমতা তৈরি হয়। এফডিএ প্রকাশিত তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, ভ্যাকসিনটির সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো ইনজেকশন প্রবেশের স্থানে ব্যথা, লাল হয়ে যাওয়া ও ফুলে উঠা। সঙ্গে স্বল্প সময়ের জন্য ক্লান্তি, মাথা ও পেশিতে ব্যথা রয়েছে। এসব হালকা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া পরীক্ষায় টিকা গ্রহণকারীদের উল্লেখযোগ্য কোনও স্বাস্থ্য পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেনি।