দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলের ইতাওয়ানে আয়োজন করা হচ্ছিল হ্যালোইন উৎসবের। চারিদিকে ছিল উৎসবের আমেজ। এরপর ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। উৎসব উদযাপনের জন্য বিপুল সংখ্যক লোক এখানে জড়ো হয়েছিল।
জনতা সরু গলি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। তখনই তোলপাড় শুরু হয়। মানুষ একে অপরের ওপরে পড়তে থাকে। এই দুর্ঘটনায় প্রায় ১৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের অধিকাংশই যুবক ও প্রাপ্তবয়স্ক বলে জানা গেছে। ইতাওয়ানে পদদলিত হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় তিন বছর পর এই পার্টির আয়োজন করা হচ্ছিল। কারণ কোভিড সংক্রমণের কারণে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে, এই পার্টিও গত তিন বছর ধরে নিষিদ্ধ ছিল। পার্টিতে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ লোকেরা মুখোশ এবং হ্যালোইন পোশাক পরেছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই ভিড় নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। মানুষের উৎসাহ তখন চরমে। সবাই উৎসবের মেজাজে ছিল। শনিবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে। বলা হচ্ছে, এ সময় একসঙ্গে ৫০ জনের বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
ভিড় ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ গুণ বেশি
মুন জু-ইয়ং নামে এক ২১ বছর বয়সী প্রত্যক্ষদর্শী জানান, লোকজন এত বেশি ছিল যে ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। সেখান থেকে বের হতে গলির সাহায্য নিচ্ছিল মানুষ। তারপর কিছু লোক একটা সরু রাস্তার দিকে এগোতে লাগল। এখানে উপস্থিত ভিড় স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ১০ গুণ বেশি ছিল। স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, দুর্ঘটনায় প্রায় ৮২ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি। তিনি জানান, নিহতদের অধিকাংশই যুবক। হ্যালোউইন উৎসবের সময় অনেক মানুষ একে অপরের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। নিহতদের মধ্যে ১৯ জন বিদেশিও রয়েছেন।
মানুষ একে অপরের উপর পড়ে
দুর্ঘটনার ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়, একটি সরু ঢালু গলিতে শত শত মানুষ আটকা পড়েছে। তারা একে অপরকে অতিক্রম করার চেষ্টা করছিল। পুলিশও তাদের সেখান থেকে বের করার চেষ্টা করে।
তদের মধ্যে এদেশের মানুষও রয়েছে
এজেন্সির মতে, সিওলের ইতাওয়ানে দুর্ঘটনায় ৩৫০ জনেরও বেশি লোক নিখোঁজ বলে জানা গেছে। এখন পর্যন্ত ১৫১ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ৯৭ জন মহিলা, ৫৪ জন পুরুষ। যেখানে ৮২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। পদদলিত হয়ে নিহত বিদেশিদের মধ্যে ইরান, উজবেকিস্তান, চিন, নরওয়ের লোক রয়েছে।