শনিবার থেকে রবিবার কয়েক ঘন্টার মধ্যে তছনছ হয়ে গিয়েছে তাইওয়ান। একের পর পর ভূমিকম্পে কেঁপেছে গোটা দেশ। বারবার কাঁপনে দেশের ছবিটাই বিগড়ে গিয়েছে।
মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে গোটা দেশ। তাও এক-আধবার নয়, প্রায় ১০০ বার কেঁপেছে দেশটি। দেশের পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ। আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রচুর।
শনিবার প্রথম ভূমিকম্প হওয়ার পর রবিবার আবারও শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়েছে তাইওয়ানে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৮। যা মারাত্মক হয়ে দেখা দেয়।
তাইওয়ান থেকে ৮৫ কিলোমিটার পূর্বে দুপুর ১২:১৪ নাগাদ এই ভূমিকম্পটি সৃষ্টি হয়েছে। একই সময়ে, তাইওয়ানের উপকূলে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পের পর সুনামির সতর্কতা জারি করেছে জাপান।
ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের তরফে জাপানকে সুনামি সতর্কতা জারি করতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দেওয়া খবরে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তাইওয়ানের বিভিন্ন অংশে ১০০ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
তাইওয়ানের উপকূল বরাবর ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের ৩০০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বিপজ্জনক সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।
তারপরের দৃশ্য অত্যন্ত ভয়াবহ। কোথাও সেতু ভেঙে পড়েছে, কোথাও বহুতল মাটি থেকে গাছের মতো উপড়ে গিয়েছে। কোথাও আবার রাস্তা দু'ভাগ হয়ে গিয়েছে। কোথাও বাড়ির মধ্যে আটকে রয়েছে মানুষ।
শনিবারও ভূমিকম্প হয়েছে। শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা মাপা হয়েছে ৬.৪। সংস্থাটির তরফে জানানো হয়েছে ভূমিকম্পের কারণে কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অন্যদিকে রেল পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। লোকজন ঘরের বাইরে ছুটে আসে। তবে সৌভাগ্যক্রমে এই ভূমিকম্পের ফলে কোনও প্রাণহানির খবর আসেনি। তবে দু-একজন সামান্য জখম হয়েছেন।
ভূমিকম্পের কারণে দেশের দক্ষিণে কাউশিওং শহরের যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তাইওয়ান রেলওয়ে প্রশাসন অস্থায়ীভাবে হুয়ালিয়েন এবং তাইতুংয়ের সাথে সংযোগকারী ট্রেনগুলি বন্ধ করে দেয়। সেই সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে দ্রুতগতির রেল পরিষেবাও। তাইতুংয়ের উত্তরে এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল বলে জানা গেছে।
প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল 'রিং অফ ফায়ার' নামক এই দেশটি অবস্থিত। এই অবস্থানের কারণেই এদেশে ঘন ঘন ভূমিকম্প হয়। ১৯৯৯ সালে শেষবার তাইওয়ান ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়। সেবার ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৬। ২০০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৬ সালেও দক্ষিণ তাইওয়ানে এক ভূমিকম্পে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন।
ছবি সৌজন্য- এপি এবং এফপি