নিজের সরকারেরই সিকিউরিটি কর্তাদের নিন্দা করলেন জাস্টিন ট্রুডো। নিজ্জর-কাণ্ডে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন কানাডার গোয়েন্দারা। সংবাদমাধ্যমে সেই খবর বের হতেই বিতর্কে তুঙ্গে ওঠে। আর এখন সেই ন্যাশানাল সিকিউরিটি আধিকারিকদেরই 'অপরাধী' বলছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'তাঁদের দেওয়া তত্ত্বগুলি বারবার ভুল প্রমাণিত হয়েছে।'
খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার সঙ্গে ভারতের তাবড় নেতারা জড়িয়ে, দাবি প্রকাশিত হয়েছিল কানাডার সংবাদপত্রে। এর আগে ট্রুডো নিজেই ভারতের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন। কিন্তু তারপরেই ভারত কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সেদেশ থেকে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এরপরেই নড়েচড়ে বসেছে কানাডা।
ট্ররুডো এখন বলছেন, 'দুর্ভাগ্যবশত মিডিয়াতে যাঁরা বিভিন্ন গোপন তথ্য ফাঁস করেছেন, তাঁদের তত্ত্বগুলি বারবার ভুল প্রমাণিত হয়েছে।'
'এই কারণেই আমরা বিদেশী হস্তক্ষেপের বিষয়ে একটি জাতীয় তদন্ত করেছি। তাতে এটাই উঠে এসেছে যে, মিডিয়া আউটলেটে তথ্য ফাঁসকারী অপরাধদের কথাগুলি মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়,' বলেন তিনি
চলতি সপ্তাহের শুরুতে, কানাডার এক সংবাদসংস্থায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জাতীয় নিরাপত্তা আধিকারিক মুখ খোলেন। সেখানে তিনি আজব দাবি করেন। বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজ্জরকে হত্যার চক্রান্ত সম্পর্কে জানতেন।' এরপরেই বিতর্কের ঝড় ওঠে।
রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে যে, 'বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই অভিযানের বিষয়ে জানতেন।' কিন্তু এই গালগল্পের বিন্দুমাত্র প্রমাণ দিতে পারেননি সেই আধিকারিক।
কানাডা সরকার বৃহস্পতিবার সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে, ট্রুডোর গোয়েন্দা উপদেষ্টা, নাথালি ড্রুইন বলেন, 'কানাডা সরকার দেশের মধ্যে গুরুতর অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী, জয়শঙ্কর বা এনএসএ ডোভালের জড়িত থাকার তথ্য জানায়নি বা প্রমাণ সম্পর্কে অবগত নয়।'
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী পরে, বিদেশ মন্ত্রক (MEA) এই দাবি 'হাস্যকর' বলে খারিজ করে দিয়েছে। MEA মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এই অভিযোগ 'স্মিয়ার প্রচার' বলে অভিহিত করেছেন।
২০২৩ সালের জুনে ট্রুডো নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন। এর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। নয়াদিল্লি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এগুলি 'অযৌক্তিক' এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছে।