Pakistan: ভারতকে সহিষ্ণুতার পাঠ, রাশিয়া-ইউক্রেনে কড়া, EU-র দ্বিচারিতা!

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনকে রীতিমতো অস্ত্র দিয়ে সমর্থন। এদিকে ভারতের বেলা পাকিস্তানের প্রতি নরম হওয়ার অনুরোধ।ইউরোপীয় ইউনিয়নের 'দ্বিচারিতা' যেন বড়ই প্রকট রাষ্ট্র সংঘের মঞ্চে। বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইশাক ডার-এর সঙ্গে সম্প্রতি ফোনে কথা বলেন ইইউ-র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বিদেশনীতি বিষয়ক প্রতিনিধি কায়া কাল্লাস।

Advertisement
ভারতকে সহিষ্ণুতার পাঠ, রাশিয়া-ইউক্রেনে কড়া, EU-র দ্বিচারিতা!

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনকে রীতিমতো অস্ত্র দিয়ে সমর্থন। এদিকে ভারতের বেলা পাকিস্তানের প্রতি নরম হওয়ার অনুরোধ।ইউরোপীয় ইউনিয়নের(EU) 'দ্বিচারিতা' যেন বড়ই প্রকট। বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইশাক ডার-এর সঙ্গে সম্প্রতি ফোনে কথা বলেন ইইউ-র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বিদেশনীতি বিষয়ক প্রতিনিধি কায়া কাল্লাস। সেখানে তিনি বলেন, ‘উত্তেজনা বাড়িয়ে কারও কোনও লাভ হয় না।’

তবে পাকিস্তান যে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদের আগুনে ঘি ঢেলে চলেছে, তাই নিয়ে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই তাঁর। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটাও তাঁর দ্বিচারিতাই বলা যেতে পারে! আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু সাধারণ মানুষও এমনটাই মনে করছেন। তাঁরা কায়া কাল্লাসের এই 'সমদূরত্বের নীতি'কে আদতে পক্ষপাতদুষ্ট বলেই কটাক্ষ করছেন।

EU Pakistan

ইইউ-র দ্বিচারিতা  

অনেকেই কায়া কাল্লাসের পুরনো কিছু টুইট খুঁজে বার করেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে লিখেছেন, 'কাউকে রক্ষা করা আর উস্কানি দেওয়া এক নয়' এবং 'আগ্রাসনকারীদের রুখে দেওয়া উচিত'। আরও বলেন, 'আপনি যদি আক্রমণকারীকে থামান না, সে থামবেই না।'

একটি টুইটে তিনি লিখেছিলেন, 'আশা করি ইউরোপ বুঝে গিয়েছে যে তোষণ নীতির ফলে শুধু আগ্রাসনকারীর শক্তিই বৃদ্ধি পায়। আগ্রাসনকারীদের যতক্ষণ না রুখে দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ তারা থামবেই না।'

EU Pakistan

ভারত-পাকিস্তানকে একই পাল্লায়?

একজন বিশ্লেষক টুইটে লেখেন, 'ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই বক্তব্যে এটাই স্পষ্ট যে, তারা ভারত-পাকিস্তানকে একই মাপকাঠিতে বিচার করে। অথচ বাস্তব ছবি একেবারেই আলাদা।’ আরেক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ লেখেন, 'অধিকাংশ ভারতীয় ইউরোপের কাছ থেকে পাকিস্তান সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ কিছু আশা করেন না। ইইউ তো পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক পার্টনার। ফলে বহুদিন ধরেই তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।’

EU Pakistan

সরব সুশান্ত সেরিন ও ওলিভার ব্লারেল

ORF-এর সিনিয়র ফেলো সুশান্ত সেরিন লেখেন, ‘সাধারণ কথাবার্তা আর কূটনীতি পাকিস্তানের সীমান্ত-পারে সন্ত্রাস থামাতে পারেনি। ইইউ যদি দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তব পরিস্থিতি বুঝত, তাহলে এত তলানিতে গিয়ে মন্তব্য করত না।’

Advertisement

তিনি আরও লেখেন, ‘আপনাদের যদি সত্যিই ধারণা থাকত, তাহলে জানতেন যে পাকিস্তানি জিহাদিদের হাতে ভারতীয় নাগরিকরা বহুবার নিহত হয়েছেন। আলোচনার চেষ্টা বহুবার হয়েছে, কিন্তু কোনও ফল আসেনি। বলুন তো, কূটনীতি আসলে কী অর্জন করেছে?’

কার্নেগি ইনস্টিটিউটের ভিজিটিং ফেলো অলিভার ব্লারেল বলেন, ‘ইউরোপের এই সমদূরত্ব নীতি হতাশাজনক। এটি দেখায় যে তারা এই অঞ্চলের বাস্তবতা এবং ইতিহাস কতটা অজ্ঞাত। ভারত বহুবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রমাণ দিয়েছে, কিন্তু কিছু হয়নি। শুধু ভারতকে চুপ করে থাকতে বলা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

EU Pakistan

ভাইরাল জয়শঙ্করের পুরনো বক্তব্য

এই বিতর্কের মাঝে ভাইরাল হয়েছে বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের একটি পুরনো বক্তব্য, যেখানে তিনি ইউরোপের দ্বিচারিতা তুলে ধরেছিলেন। জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘ইউরোপকে বুঝতে হবে যে তাদের সমস্যা সারা বিশ্বের সমস্যা নয়, কিন্তু বিশ্বের সমস্যাগুলিকে তারা গুরুত্বই দেয় না।’

এই মন্তব্য ফের একবার মনে করিয়ে দিচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই পদক্ষেপ ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা নিয়ে তাদের উদাসীনতারই পরিচয়। সাথে আবারও স্পষ্ট হলো ইউরোপের দ্বিমুখী নীতির নগ্ন রূপ। 

POST A COMMENT
Advertisement