নেপালের সুপ্রিম কোর্ট বুধবার বিকিনি কিলার হিসেবে কুখ্যাত চার্লস শোভরাজকে (Charles Sobhraj) মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। শোভরাজকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার ৭৮ বছর বয়সের ভিত্তিতে। সে ২০০৩ সাল থেকে জেলে রয়েছেন। এখন তাকে ১৫ দিনের মধ্যে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। একসময়ের মোস্ট ওয়ান্টেড সিরিয়াল কিলারকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল তাঁর হাঁটুর বয়সী এক মেয়ে। নেপালি মেয়েটির নাম নিহিতা বিশ্বাস (Nihita Biswas)।
নিহিতা বিশ্বাস কে?
নিহিতা বিশ্বাস নেপালের বাসিন্দা। ঘটনাটি ১৪ বছর আগের। চার্লস শোভরাজকে যে জেলে রাখা হয়েছিল সেখানে গিয়েছিলেন নিহিতা বিশ্বাস। কাকতালীয়ভাবে চার্লসের সঙ্গে দেখা হয় নিহিতা বিশ্বাসের। শোভরাজ নিহিতাকে দেখে প্রেমে পড়ে যান। নিহিতা বিশ্বাসও চার্লস শোভরাজের স্টাইল এবং কথোপকথনে মুগ্ধ হয়েছিলেন। চার্লস শোভরাজের সঙ্গে দেখা করতে তিনি প্রায়ই নেপালের জেলে যেতেন। একসময় দুজনেই একে অপরকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময়, নিহিতার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর, চার্লস শোভরাজের বয়স ছিল ৬৪ বছর।
বিয়ের ঘোষণা করেছিলেন নিহিতা
চার্লস শোভরাজকে বিয়ে করার পরই শিরোনাম হয়েছিলেন নিহিতা বিশ্বাস। টিভি রিয়েলিটি শো 'বিগ বস ৫'-এ সুযোগ পান নিহিতা। বিগ বস ৫-এ অংশগ্রহণকারী হিসেবে দেখা গিয়েছিল নিহিতাকে। কিন্তু তিনি এই শোতে বেশিদিন টিকে থাকতে পারেননি। তিনি শো থেকে বহিষ্কৃত হন। বিগ বসের ঘরে শ্রদ্ধা শর্মার সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল নিহিতা বিশ্বাসের। তিনি মনদীপ বেলভি নামে একজন প্রতিযোগীর সাথেও সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন। কারণ মনদীপ নিহিতাকে চার্লসের সঙ্গে তার যৌন জীবন নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়। বিগ বস থেকে বেরিয়ে আসার পর নিহিতা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে চার্লস শোভরাজের পরামর্শেই তিনি বিগ বসে গিয়েছিলেন।
নিহিতা এখন কোথায়?
বিগ বস-এ হাজির হওয়ার পর কিছুদিন শিরোনামে ছিলেন নিহিতা। কিন্তু এরপর হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। এখন কেউ জানে না নিহিতা বিশ্বাস কোথায় এবং কী করেন? আশ্চর্যের বিষয় হল, সোশ্যাল মিডিয়াতেও নিহিতার উপস্থিতি নেই। চার্লস শোভরাজ জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর কী আবারও হাজির হতে পারেন নিহিতা বিশ্বাস।
চার্লস শোবরাজের মুক্তির খবর প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গে নিহিতার সম্পর্কে পুরানো খবরগুলি ফের চর্চায় আসে। শোভরাজ ম্যাগাজিনের কভার, বই, চলচ্চিত্র এবং ওটিটি সিরিজের বিষয় হয়েছিলেন। তার প্রেমের জীবনও ট্যাবলয়েডের শিরোনাম হয়েছে। বিশেষ করে নিহিতা বিশ্বাসের সঙ্গে তার বিয়ে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। নিহিতা বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন শোভারাজের দো-ভাষী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। নিহিতার দাবি, শোভরাজ নির্দোষ।
শোভরাজের বিরুদ্ধে ১৯৭০-এর দশকে প্রায় ২০ জনকে খুনের অভিযোগ ছিল। তবে নেপালের সুপ্রিম কোর্ট শোভরাজের মুক্তি ও নির্বাসনের আদেশ দিলেও জেল কর্তৃপক্ষ কুখ্যাত অপরাধীকে মুক্তি দিতে অস্বীকার করেছে। নেপালের জেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত অস্পষ্ট। এবং কোন মামলায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তা উল্লেখ নেই।
আরও পড়ুন-১৯ বছর পর 'বিকিনি কিলার' চার্লস শোভরাজের মুক্তির নির্দেশ নেপালের সুপ্রিম কোর্টের